প্রেস বিজ্ঞপ্তি::প্রাচিন জগন্নাথপুর এককালে একটি দেশীয় খণ্ড রাজ্য ছিল । জগন্নাথপুর নামকরনের পূর্বে এলাকাটির নামছিল
” পাণ্ডুয়া ” । পাণ্ডুয়া তখন প্রাচিন লাউর রাজ্যের একটি প্রদেশ ছিল । সে প্রদেশের শাসনকর্তা ছিলেন লাউর রাজ্যের যুবরাজ বিজয় মানিক্য । ১১৮৪ খৃষ্টাব্দে পাণ্ডুয়ার শাসনকর্তা যুবরাজ বিজয় মানিক্য তাঁর আরেক সহযোগি পাণ্ডুয়ার ” কেশবপুর ” এ বসবাসরত যুবরাজ ” কেশব মিশ্র ” এর সহায়তায় পাণ্ডুয়াকে একটি স্বাধীন খণ্ড রাজ্য ঘোষণা করে, স্বাধীন পাণ্ডুয়া রাজ্যের রাজা হয়ে সিংহাসনে আরোহন করে রাজ্য পরিচালনা করেন । রাজা বিজয় মানিক্য তাঁর রাজ্যে নিজেস্ব মুদ্রার প্রচলন করিয়াছিলেন আর সে মুদ্রার নাম ছিল ” ছেক্কা ” । ছেক্কা মুদ্রার মুদ্রণ স্হলে পরবর্তিতে বসতী গডে উঠলে বসতীটির নামকরন হয় মুদ্রার নামানুসারে ” ছেক্কা ” গ্রাম অর্থাৎ আধুনা ” ছিক্কা ” গ্রাম। তথ্য:-:- সিলেট বিভাগের ইতিবৃত্ব- ড. মোহাম্মদ মুমিনুল হক ও প্রাচিন জগন্নাথপুর ( পাণ্ডুয়া ) রাজ্যের ইতিবৃত্ব-মোহাম্মদ গুলজার হোসাইন মহালদার । রাজা বিজয় মানিক্যের মৃত্যুর পর রাজা হন জগন্নাথ সিংহ ( জগন্নাথ মিশ্র ) । জগন্নাথ সিংহের তিরোদানের পর রাজা রামনাথ সিংহ ( রাজা রামনাথ মিশ্র ) সিংহাসনে আরোহনের সময়ে রাজ্যের নাম পরিবর্তন করে তাঁর প্রয়াত বাবা রাজা জগন্নাথ মিশ্র ( জগন্নাথ সিংহ ) এর নামানুসারে রাজ্যের নামকরন করেন জগন্নাথপুর রাজ্য ।আর রাজধানীর নামকরন করেন পাণ্ডুয়ার নামানুসারে ” পেরুয়া ” । সে সময়টি ছিল ইতিহাসবিদদের মতে ১২৭২ খৃষ্টাব্দ।
জগন্নাথপুরের শেষ রাজা বিজয় সিংহ তাঁর অপ্রাপ্ত দুই পুত্র সন্তান , প্রতাপ সিংহ ও গর্ন্ধব সিংহকে রেখে বানিয়াচং এর রাজা হাবিব খাঁ ( গোবিন্দ সিংহ ) এর গোপ্ত ঘাতক দ্বারা খুন হয়ে মৃত্যুবরণ করেন সম্ভবত ১৬২০ খৃষ্টাব্দে । এর কয়েক হছর পরই জগন্নাথপুর বৃটিশ শাসনাধীনে চলে যায় । জগন্নাথপুর আমাদের সিলেট বিভাগের মধ্যবর্তী এলাকা । জগন্নাথপুরের প্রাচীন ইতিহাস , ঐতিহ্য ও মর্যাদার দ্বারা প্রতিয়মান হয় যে এই একবিংশ শতাব্দীতে জগন্নাথপুর একটি জেলা সদরে রুপান্তরিত হওয়ার কথা ! কিন্তু আপসোস বৃটিশ আমল হয়ে পাকিস্তানী আমল ও আমাদের নিজ শাসিত বাংলাদেশের আমলেও জগন্নাথপুর তার ন্যায্য পাওনা
” উন্নয়ন ” থেকে বন্চিত ! । আমাদের নির্বাচনি এলাকার নূতুন থানা ( উপজেলা ) দক্ষিন সুনামগন্জ, তুলনামূলক ভাবে উন্নয়নের দিকে জগন্নাথপুরের ৫০০ শত বছর পিছনে ছিল । কিন্তু তাঁদের এলাকার সন্তান বতর্মান এম পি , আমাদের পরিকল্পনা মন্ত্রী জনাব এম এ মান্নানের ছোয়ায় দক্ষিন সুনামগন্জের উন্নয়ন এখন চোখে পড়ার মত । সে তুলনায় জগন্নাথপুরের উন্নয়ন হলে বর্তমান জগন্নাথপুরের এই উন্নয়ন বন্চিত দশা এলাকাবসীর সামনে ধরা পরতো না । আমি বলতে যাচ্ছি না যে এম এ মান্নান সাহেব উন্নয়ন করেননি ।তবে হাঁ সত্যিকারে জগন্নাথপুর উন্নয়ন বন্চিত অবস্হায় রয়েছে । জনাব এম এ মান্নান সাহেবকে আরও জগন্নাথপুর দরদী হয়ে কাজ করলে জগন্নাথপুরের উন্নয়নের সাথে-সাথে জনপ্রিয়তা বাড়বে ও নির্বচনে ধারাবহিকতাও বজায় থাকবে ।জগন্নাথপুরের পূর্বে সিলেট জেলা সদর , পশ্চিমে সুনামগন্জ জেলা সদর ও দক্ষিনে হবিগন্জ জেলা সদর ।ওই সব জেলা সদরের দূরত্ব জগন্নাথপুর থেকে হিসাবে আনলে প্রাচিন জগন্নাথপুর তার নিজেস্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি , শিক্ষার হার , লোক সংখ্যা ইত্যাদির দ্বারা বাংলাদেশের শরিয়তপুর ও মাদারীপুর জেলার মত একটি জেলা সদর হওয়ার যোগ্যতা ইতিপুর্বেই অর্জন করেছিল । কিন্তু জগন্নাথপুরের নেতা-নেত্রীদের অবহেলা অথবা অযোগ্যতা বা সৎসাহস হীনতার কারনে বা জগন্নাথপুর বিদ্বেষীদের জন্য আমরা ন্যায্য উন্নয়ন থেকে বন্চিত রয়েছি । সামনে জগন্নাথপুর পৌর নির্বাচন , উপজেলা ও জাতীয় নির্বাচন ও বেশ দূরে নয় তাই আগামী নির্বাচন গুলোতে আমাদের নিতান্ত উচিত হবে যে নির্বাচনে ভোটের বদলে টাকা কামাইয়ের লিপ্সা ত্যাগ করে আমাদের মূল্যবান ভোটের দ্বারা গণবিপ্লব ঘটিয়ে জগন্নাথপুর দরদী কেন যোগ্য ব্যাক্তি বিশেষকে নির্বাচিত করে জগন্নাথপুরের উন্নয়নকে তরান্বিত করা । জগন্নাথপুর পৌর এরিয়াকে বর্ধিত করে পশ্চিমে বৃহত্তর চিলাউড়া অর্থাৎ কাটাগাং এর উত্তর পাড় পর্যন্ত ও দক্ষিনে ঘোগাঁও হয়ে শীবগঞ্জ আবার ইছগাঁও এর ঢালা পর্যন্ত এবং উত্তর-পশ্চিমে খাসিলার ব্রীজের এপাড় পর্যন্ত পৌর এরিয়ার অর্ন্তরভুক্তি করা প্রয়োজন । যাত্রপাশার মোড় থেকে লকেলবোর্ডের সড়কটি রওয়া কান্দি হয়ে চিলাউড়া পর্যন্ত সংযোগ স্হাপন করা জরুরী । পলিমাটির দ্বারা মোহাই হাওর অর্দ্ধেকেরও বেশী ভরাট হয়ে গিয়াছে তাই মোহাই
হাওরে আর ঢেউ নাই । এখন কাটা গাং এর পাড় দিয়ে সড়ক করা সম্ভব । বভিষৎ এ সড়ক হবে এতে সন্দেহ নাই ।
মোহাম্মদ গুলজার হোসাইন ,
সেইন্ট আলবান্স-ইউকে ।
( বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্হানরত ) ।