জগন্নাথপুর প্রতিনিধি, :: সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর পৌরসভার উপ-নির্বাচন আগামী ২৯ মার্চ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নির্বাচনে মেয়র পদে ৪ হেভিওয়েট প্রার্থীর লড়াই জমে উঠেছে। নিজেদের বিজয় নিশ্চিতের লক্ষে প্রার্থীরা মরিয়া হয়ে উঠেছেন। প্রার্থীদের সাথে তাঁদের সমর্থকরাও দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। প্রার্থীদের সমর্থনে চলছে প্রচার-প্রচারণা।
পোস্টারে-পোস্টারে ছেয়ে গেছে পৌর শহর। অবিরাম চলছে মাইকিং। ঘরে-ঘরে চলছে ভোট প্রার্থনা। কে হচ্ছেন আগামী দিনের পৌর মেয়র। এ নিয়ে স্থানীয় ভোটার ও দেশ-বিদেশে থাকা সমর্থকদের মধ্যে চলছে জোর আলোচনা। কাকে এবং কেন ভোট দেয়া উচিত। কে নির্বাচিত হলে পৌরসভার কাঙ্খিত উন্নয়ন হবে। এসব আলোচনায় সরগরম হয়ে উঠেছে পৌর শহর। এসব আলোচনায় ঘুরেফিরে উঠেছে আসছে প্রার্থীদের ব্যক্তি গ্রহণ যোগ্যতা ও দলীয় সমর্থন।
এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে অংশ নেয়া ৪ প্রার্থীই হেভিওয়েট। কারণ হিসেবে ভোটারা বলছেন, আওয়ামীলীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী মিজানুর রশীদ ভূইয়া। পৌর এলাকায় রয়েছে তাঁর ব্যাপক গ্রহণ যোগ্যতা। তিনি ছিলেন সাবেক পৌরসভার চেয়ারম্যান। তাঁর প্রয়াত পিতা হারুনুর রশীদ হিরণ মিয়া ছিলেন প্রথম পৌর চেয়ারম্যান ও ৫ বারের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান। রয়েছে পারিবারিক ইমেজ। পৌর এলাকায় রয়েছে ব্যাপক কদর ও আধিপত্য। এর মধ্যে রয়েছে সরকার দল আওয়ামী লীগের সমর্থন। তিনি দলীয় প্রতীক নৌকা নিয়ে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। ধারণা করা হচ্ছে নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্ধিতায় লড়বেন মিজানুর রশীদ ভূইয়া। রয়েছে তাঁর নিজস্ব জনবল ও ভোট ব্যাংক। এছাড়া দলীয় নেতাকর্মীরা তো দিনরাত নৌকার পক্ষে কাজ করছেন। সব মিলিয়ে মেয়র প্রার্থী মিজানুর রশীদ ভূইয়া একজন হেভিওয়েট প্রার্থী। তিনি ব্যক্তি ও দলীয় ইমেজে এগিয়ে রয়েছেন। তবে মিজানুর রশীদ ভূইয়ার ২/১ জন ব্যক্তির বিতর্কিত সামন্য ত্রুটি-বিচ্যুতির কারণে কিছু মানুষের মনে সৃষ্টি হওয়া অজানা সংশয় নির্বাচনে প্রভাব পড়তে পারে।
বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী রাজু আহমদ। তিনি বিগত নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে সাবেক প্রয়াত সফল মেয়র আলহাজ আবদুল মনাফের সাথে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে প্রতিদ্বন্ধিতা করে পরাজিত হন। উনার রয়েছে সুদীর্ঘ রাজনৈতিক পরিচয় ,ছাত্রদলের রাজনীতি থেকে উঠে আসা রাজু আহমেদ ছিলেন স্বরূপচন্দ্র সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি, জগন্নাথপুর সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি, জগন্নাথপুর উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি,সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সহ সভাপতি ও বর্তমানে যুক্তরাজ্য বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক । বিগত নির্বাচনের ন্যায় এবারও বিএনপির দলীয় প্রতীক ধানের শীষ দল উনাকে দিয়েছে। মাঠের ধারনা এবারের নির্বাচনে রাজু আহমেদ একজন শক্তিশালী প্রার্থী, তিনি ব্যক্তি ও দলীয় প্রতিক ধানের শীর্ষ নিয়ে এগিয়ে আছেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল হোসেন সেলিম (জগ) প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। তিনি প্রয়াত সফল মেয়র আলহাজ আবদুল মনাফের ছেলে। তাঁর ব্যক্তি পরিচিতি তেমন একটা না থাকলেও তাঁর পিতার পরিচয়ে এগিয়ে আছেন। তাঁর প্রতি ভোটারদের আলাদা আবেগ রয়েছে। সেই আবেগকে কাজে লাগিয়ে তিনি সহজে নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে পারেন। তবে ভূল করলে হিতে-বিপরীত হতে পারে।
আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী আবিবুল বারী আয়হান (মোবাইল) প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। তিনি সাবেক কৃতী ফুটবলার। এলাকায় রয়েছে তাঁর ব্যাপক পরিচিতি, পারিবারিক ইমেজ ও গ্রহণ যোগ্যতা। রয়েছে নিজস্ব লোকবল ও ভোট ব্যাংক। এছাড়া সাবেক ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আছাব আলী ও সাবেক পৌর মেয়র আক্তার হোসেনের চাচাতো ভাইয়ের ছেলে আবিবুল বারী আয়হান।উনি চাচাদের ইমেজ কে কাজে লাগাতে চাচ্ছেন, তবে নির্বাচনী মাঠে এখনো তেমন সারা জাগাতে পারেননি তিনি।
সব মিলিয়ে জগন্নাথপুরে নির্বাচনে সব সময় টাকার প্রভাব থাকে। এবারো ও টাকা ছড়ানোর কারণে নির্বাচনী ফলাফল ওলটপালট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ১৪ মার্চ শনিবার স্থানীয় একাধিক প্রবীণ ও নতুন ভোটারদের সাথে পৃথক আলাপকালে এসব তথ্য উঠে এসেছে।