হিংসার সংজ্ঞা কী? কেন মানুষের মনে হিংসার জন্ম হয়?
১ min read
যা সাধারণত নেতিবাচক চিন্তাভাবনা থেকে মানুষের মনে জন্ম নেয়।এছাড়াও নিরাপত্তাহীনতা, ভয় এবং উদ্বেগের আশঙ্কা থেকে অনেক মানুষয়ই হিংসুক হয়ে উঠে।হিংসার সজ্ঞা দিতে হলে তা এরকম দাড়ায়,
“হিংসা বা ঈর্সা মানুষের এমন একটি প্রবণতা যা কারো কিছু ক্ষতি করার অনুভূতি জাগায় বা কোন কিছুকে নিজের করে পাওয়ার সুপ্ত বাসনা কে জাগ্রত করে।
ছোটবেলা থেকেই প্রতিটি সমাজ, প্রতিটি সংস্কৃতি, প্রতিটি ধর্মই আমাদেরকে একের সাথে অন্যের তুলনা করতে শেখায়।তোমাকে ওর চাইতে ভালো রেজাল্ট করতে হবে আরো হ্যান-ত্যান,,,আর প্রতিটি শিশুই এই তুলনা শিখতে শুধু বাধ্য না একদম উম্মুখ।
সম্ভবত এই তুলনা করে বেঁচে থাকার থেকেই ছোটবেলা থেকেই আমাদের অপরিণত মনে হিংসার জন্ম।আর শিশুরা কিছুটা স্বার্থপর প্রকৃতির।তারা যেকোন কিছুই নিজের করে পাওয়ার জন্য সদা প্রস্তুত।আর সেই কাজে বড়রাও যদি প্রেরণা যোগায় তাহলে তো আর কথাই নেই!এ থেকে সৃষ্টি হয় বৈষম্য।বৈষম্যের জন্য তুলনা সর্বমুলে দায়ী।তাই আমার মতে তুলনা ই হিংসার মূল কারন ।আমার চেয়ে কেউ ভালো বা কেউ আমার চেয়ে দুর্বল- এই তুলনা থেকেই আমরা বুঝতে সক্ষম হই।
যেমন: আমার কোন বন্ধু আমার চেয়ে সফল হলে – এটি আমাকে সবসময় প্যারা/ব্যাথা দেয়। তার মতো হওয়ার জন্য অধ্যাবসায়,লড়াই, সংগ্রাম ইত্যাদি ইত্যাদি করার জন্য আমার সুপ্তমন বার বার আমাকে তাড়া করে বেড়ায় ।যখন আমি এই অধ্যাবসায়,সংগ্রাম এননকি লড়াই এর মাধ্যমে পেয়ে উঠি না ঠিক তখনি মন একটা বিকল্প ওয়ে খোঁজে,হ্যাঁ এই বিকল্প পথটা খুঁজতে আমার মন যেকোন উপায়েই চাইবে আমি সফল হই এবং সেটা আমার সেই সফল বন্ধুটির চাইতে ও বেশি।হ্যাঁ,যখন আমি সফল হওয়ার জন্য উম্মুখ থাকবো তখন আমার খেয়াল থাকবে না যে আমি সঠিকভাবে না অন্যায়ভাবে সফল হচ্ছি।আর এ জন্যই আমি পরিক্ষা সামনে বন্ধুর ব্যাগ থেকে তার নোট খাতাটা সরিয়ে ফেলতেও দ্বিধা বোধ করবো না।এটা হিংসার একটা রুপ।এই বদঅভ্যাস কারো ক্ষতি করার প্রেরণা জোগায়।
মনের ভিতর হিংসা জন্ম নেওয়ার দুটি অন্যতম কারনঃ
১.নিজের দক্ষতার বিষয়ে অনিশ্চিত থাকা।
২.অভাবী হওয়া।
হিংসা একটি জটিল আবেগ। এই আবেগ সবাইকে সমানভাবে আঘাত করে। বন্ধুত্বের প্রতিযোগিতা কিংবা স্নেহের প্রতিদ্বন্দ্বী ভাইবোন,একই অফিসে কর্মরত সহকর্মী,সমতুল্য কোন ব্যাক্তি এবং প্রতিবেশীদের মধ্যে এটি সবচেয়ে বেশি উত্থাপিত হয়। হিংসা সাধারনত দু’জনের মধ্যে ঘটে এবং সর্বোপরি “আপনার কাছে যা আছে তা আমি চাই” এই বাসনাটিকেই সংক্ষিপ্ত করে হিংসা বলা যায়।হিংসা একটি বেদনাদায়ক মানসিক অভিজ্ঞতা,,,কখনো কখনো আনমনেই আমরা হিংসুক হয়ে উঠি।হিংসা সমাজে অপরাধ প্রবণতাসহ,নানা ধরনের বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করে।তাই নিজের+চারপাশকে ভালো রাখার জন্য এই বদ অভ্যাসটিকে আমাদের দমন করতে হবে।
যদি কেউ হিংসুক হয় তবে তাকে রাগান্বিত বা তিক্ত মনে হয় কারণ সে মনে করে যে অন্য কোনও ব্যক্তি তার অবস্হান বা জায়গা অথ্যাৎ পজিশন দখল করার চেষ্টা করছে। এদিক থেকে হিংসাকে “সবুজ চোখের দানব” বলা যায় কারণ এটি কাউকে অন্যের সাথে নিজেকে তুলনা করতে আগ্রহী করে তুলে।ফলে নিজের অবস্হান সম্পর্কে জানা যায় এবং আরো অধিক কাজ করার আগ্রহ পাওয়া যায়।কিন্তু হিংসুক হওয়া আনন্দের নয়,এটি সবসময় মানুষকে অস্বস্তিতে রাখে। অন্য কারও কাছে যা আছে তা আপনি যখন চান তখন আপনিও চিন্তিত হচ্ছেন যে কেউ আপনার যা আছে তা নেওয়ার চেষ্টা করছে।তাই হিংসা নয় সহযোগিতাই পারে সর্বোচ্চ লেভেলের সম্মান এনে দিতে।
তাই আসুন,
“আমরা হিংসা নামের বিকৃত প্রবৃত্তিটাকে রোধ করি এবং সুখি,সুন্দর সমাজ গড়ি।”