ডেস্ক রিপোর্ট:: ফেনীর সোনাগাজীতে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারে বাধ্য করায় মো. শাহ জাহান নামের এক কাউন্সিলর প্রার্থী ফেসবুকে লাইভে এসে প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার চেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। বুধবার রাতে সোনাগাজী পৌরসভার তুলাতলী এলাকায় নিজ বাড়িতে বিষ পান করে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মো. শাহ জাহান পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
তিনি ফেসবুক লাইভে অভিযোগ করেন, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন বুধবার নিজ দল আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা জোর করে তাকে কাউন্সিলর পদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে বাধ্য করেছেন।
শাহ জাহান প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি বলেছেন, পৌরসভা নির্বাচনে তৃণমূলকে গুরুত্ব দিতে। আপনার কথায় আশ্বস্ত হয়ে আমি সোনাগাজী পৌরসভা নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে মনোনয়ন সংগ্রহ করি। আমার দল আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের কয়েকজন নেতা আমাকে বারবার সকাল থেকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে চাপ দিতে থাকেন। আমি তাদের চাপে পড়ে আত্মগোপনে চলে যাই। বিকেলে তারা আমার বাড়ি গিয়ে আমার বৃদ্ধ মাকে চাপ প্রয়োগ শুরু করেন।
খবর পেয়ে বাড়িতে গেলে তারা আমাকে জোর করে ধরে নির্বাচন কার্যালয়ে নিয়ে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে বাধ্য করেন।
শাহ জাহান আরো বলেন, যারা জোর করে আমাকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে বাধ্য করেছেন, আমার মৃত্যুর জন্য তারাই দায়ী থাকবেন।
এদিকে শাহ জাহানের এক স্বজন জানান, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারে বাধ্য করায় সন্ধ্যায় তিনি ঘরের ভেতরে দরজা বন্ধ করে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে বিষয়টি জানতে পেরে রাতে তার কক্ষের দরজা ভেঙ্গে তাকে দ্রুত স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. সাদেকুল করিম বলেন, বিষপানে অসুস্থ অবস্থায় শাহ জাহান নামের একজনকে হাসপাতালে আনা হলে দ্রুত তার পাকস্থলী পরিষ্কার করা হয়। বর্তমানে তিনি আশঙ্কামুক্ত হলেও শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে তাকে হাসপাতালে অবজারভেশনে রাখা হয়েছে।
এদিকে পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাহার উল্যাহ নামের এক কাউন্সিলর প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার না করায় তার বাড়িতে প্রতিপক্ষের লোকজন হামলা চালিয়েছেন বলে তিনি অভিযোগ করেছেন। এ ঘটনায় তিনি থানায় মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। গত মঙ্গলবার রাত থেকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করার আগপর্যন্ত স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নানাভাবে হুমকি-ধমকি ও চাপ প্রয়োগ করেন বলেও একাধিক প্রার্থী অভিযোগ করেছেন।
সোনাগাজী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটর্নিং অফিসার মোহাম্মদ মাইনুল হক জানান, সোনাগাজী পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর পদে ১২ জন প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এর মধ্যে মেয়র পদে দু’জন, সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে নয়জন এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ডে একজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের করেন। বৃহস্পতিবার প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্ধ দেওয়া হবে। নির্বাচনে মেয়র পদে ৪ জন, ৯টি সাধারণ ওয়ার্ডে ২৩ জন ও ৩টি সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডে ৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।