লঙ্কানদের ৫শ’ ছুঁতে দেয়নি বাংলাদেশ
১ min read
কুশল মেন্ডিসের সঙ্গে ডিকওয়েলা দ্বিতীয় দিনের শুরু থেকেই বাংলাদেশের বোলারদের দিশাহারা করে রেখেছিলেন। আগের দিন ৩২১ রানের সঙ্গে স্রোতের মতো রান যোগ করতে থাকেন দুজন। মেন্ডিস তার আগের ক্যারিয়ার সেরা ১৭৬ রানের ইনিংস ছাড়িয়ে অপেক্ষা করছিলেন প্রথম ডাবল সেঞ্চুরির। ১৯৪ রানের সময় মাইলফলক ছুঁতে যেন তর সইছিল না ২২ বছর বয়সী এ তরুণের। কিন্তু মেহিদী হাসান মিরাজের বলে বের হয়ে এসে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে আউট হলে ভাঙে তার স্বপ্ন। থামলেন মাত্র ৬ রানের জন্য ডবল সেঞ্চুরি হাতছাড়া করার অক্ষেপ নিয়ে। এরপর মিরাজকে তৃতীয় উইকেট উপহার দিয়ে ৭৫ রানে থামেন ডিকওয়েলাও। তখন শ্রীলঙ্কার স্কোর বোর্ডে ৬ উইকেট হারিয়ে ৪৫২ রান। সেই সঙ্গে টাইগাররা মধ্যাহ্ন বিরতিতে যায় রানের লাগাম টেনে ধরার স্বস্তি নিয়ে। শেষ ৪ উইকেটে অবশ্য টাইগার বোলারদের বেশি ভোগাতে পারেননি স্বাগতিকরা। তবে দিলরুয়ান পেরেরা ৫১ রান করে চেষ্টা করেছিলেন। তাকে সঙ্গ দিতে পারেননি কেউ। শেষ পর্যন্ত প্রথম ইনিংসে তারা থামে ৪৯৪ রানে। শেষ ৫ উইকেটের পতন হয় মাত্র ৬৫ রানে। এর মধ্যে ৩৭ রানে আউট হন শেষ চার ব্যাটসম্যান। বাংলাদেশের বিপক্ষে পাঁচবার ৫শ’র নিচে আউট হয়েছিল শ্রীলঙ্ক। এবার নিজেদের মাটিতে তৃতীয় বারের মতো টাইগারদের বিপক্ষে ৫শ’ ছুঁতে না পারার আক্ষেপ নিয়ে শেষ হয় তাদের প্রথম ইনিংস। ২০১৩ সালে গল স্টেডিয়ামে প্রথম দেখাতে তিন সেঞ্চুরিতে মাত্র ৪ উইকেটে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ছিল ৫৭০ রান। কিন্তু সেই গলেই লঙ্কানদের অল আউট করার কৃতিত্ব বোলারদের দিতেই হবে। আগের দিন ১ উইকেট পাওয়া মেহেদী হাসান মিরাজ গতকাল নিলেন আরো ৩টি উইকেট। মোস্তাফিজ নিয়েছেন ২টি। সাকিব আল হাসান প্রথম উইকেটটি পান লঙ্কার বুকে শেষ পেরেক ঠুকে।
মধ্যাহ্ন বিরতিতে শ্রীলঙ্কা ৪৪৩ রানে হারিয়েছিল ৬টি উইকেট। এর মধ্যে বাংলাদেশের বিপক্ষে সপ্তম সর্বোচ্চ রানের ইনিংসটি এসেছে মেন্ডিসের ব্যাট থেকে। তার ১৯৪ রানের ইনিংসটি তিনি সাজান ১৯টি চার ও ৪টি ছয়ের মারে। যদিও প্রথম বলে জীবন পেয়েছিলেন মেন্ডিস। কিন্তু গতকাল আউট হওয়ার আগেও একবার জীবন পান মেন্ডিস ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে। কিন্তু দুর্ভাগা শুভাশিষ। বাউন্ডারিতে মোস্তাফিজ ক্যাচ লুফে নিলেও বল হাতে তিনি চলে যান সীমানার বাইরে। তার আগে পঞ্চম উইকেটে মেন্ডিস ও ডিকওয়েলা গড়েন ১২৪ বলে ১১০ রানের জুটি। আরেক পাশে ডিকেওয়েলা কম যাননি। দিনের প্রথম ওভারেই ফ্লিক করে ছক্কা মেরেছিলেন। এরপর কাট, আপার কাট, সুইপ, রিভার্স সুইপে দিশাহারা করেছেন বাংলাদেশের বোলারদের। আর তার ওয়ানডে ধাঁচে ব্যাটিং শেষ পর্যন্ত আউট হয়েছেন তিনি। বেরিয়ে এসে উড়িয়ে মারতে গিয়েছিলেন মিরাজকে। টাইগার তরুণ অফস্পিনার মিরাজ সেটি বুঝতে পেরেই বল করলেন একটু টেনে ও ব্যাটসম্যান থেকে দূরে। ডিকওয়েলা মারলেন অন সাইডে, বল গেল শর্ট থার্ড ম্যানে। মাহমুদউল্লাহর ক্যাচ। ৭৬ বলে ৭৫ রানে ফেরেন লঙ্কান উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান। দ্বিতীয় দিন সকালেই তিনি করেছেন ৬১ রান। তার ক্যারিয়ারে তৃতীয় ফিফটির ইনিংসটি সাজিয়েছেন ৬টি চার ও একটি ছয়ের মারে ৭৬ বলে।
মধ্যাহ্ন বিরতির পর নিয়মিতই উইকেট নেয় বাংলাদেশ। বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন দিলরুয়ান পেরেরা। সেই বাধা সরান মিরাজ। অফ-মিডলে থাকা সোজা বল সুইপ খেলতে গিয়ে ব্যাটে লাগাতে পারেননি পেরেরা। রিভিউ নিয়ে বাঁচতে পারেননি এলবিডব্লিউ থেকে। ফেরেন ৫১ রানে। তার আগে অবশ্য অধিনায়ক রঙ্গনা হেরাথকে নিজের দ্বিতীয় শিকার বানান মোস্তাফিজ। আর রান আউট হন সুরাঙ্গা লাকমল। সাকিবের বল খেলেই ছুটেছিলেন লাকমল। কিন্তু অপর প্রান্তে ব্যাটসম্যান দাঁড়িয়েছিলেন। পরের ওভারেই তাসকিনকে চার মেরে দিলরুয়ান তুলে নেন ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফিফটি। তার আউটের পর শ্রীলঙ্কা ইনিংসের ইতি টানেন আবারও আইসিসি টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ের অলরাউন্ডারদের শীর্ষে উঠে আসা সাকিব আল হাসান। বাঁহাতি এই স্পিনারের বলে সান্দাকান ক্যাচ তুললে অনেকটা দৌড়ে গিয়ে চমৎকার এক ক্যাচ তালুবন্দি করেন মিরাজ। সেই সঙ্গে থামে লঙ্কান প্রথম ইনিংস।