নলুয়ার ও মইয়ার হাওর : ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ শেষ হবে কবে?
১ min read
জগন্নাথপুর উপজেলার সর্ববৃহৎ নলুয়ার হাওর ও মইয়ার হাওর রক্ষা বেড়িবাঁধের কাজ এখনো শেষ হয়নি। কাজ শেষ না হওয়ায় অকাল বন্যায় ফসল তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। যদিও আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সম্পূর্ণ কাজ শেষ করার প্রতিশ্রুতি পাউবো’র।
জানাগেছে, প্রায় দেড়মাস মাস আগে জগন্নাথপুর উপজেলার নলুয়ার হাওর ও মইয়ার রক্ষা বেড়িবাঁধের কাজ শুরু হয়। ৩ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে প্রায় ৭২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সংস্কার কাজ গত ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত শেষ হয়নি। ৪টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও ৩৩টি পিআইসি কমিটির অধীনে কাজ হচ্ছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও পিআইসি কমিটির অবহেলার কারণে এখন পর্যন্ত কাজ শেষ হয়নি বলে স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ। নলুয়ার হাওর বেড়িবাঁধের বড় ৪টি ভাঙ্গনে প্রায় ৬৫ ভাগ শেষ হলেও টানা কাজ এখনো হয়নি বলে কৃষকরা জানিয়েছেন।
সরজমিনে নলুয়ার হাওর পারের ভূরাখালি ও দাস নোয়াগাঁও গ্রাম এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, নলুয়ার হাওর রক্ষা পুরনো বাঁধের উপর ছড়িয়ে ছিটিয়ে সামান্য মাটি ফেলা হলেও পুরো বাঁধে কোন মাটি ভরাট হয়নি। এ সময় স্থানীয়রা জানান, সংশ্লিষ্টরা বাঁধের অন্যান্য গর্তস্থানে মাটি ভরাট করলেও পুরনো বাঁধের উপর মাটি ভরাট করছে না। এ বাঁধে মাটি ভরাট না হলে হাওর অরক্ষিত থাকবে। বন্যার পানি বাঁধের উপর দিয়ে হাওরে ঢুকে পড়বে। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তারা বাঁধের কাজ শেষ করার দাবি জানান।
এ ব্যাপারে জগন্নাথপুর উপজেলার ভূরাখালি গ্রামের বাসিন্দা উপজেলা হাওর উন্নয়ন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান জানান, সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত অনুমান ২০ ভাগ কাজ করা হলেও বাঁধের ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়নি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, বাঁধের কাজ পাওয়া ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ও পিআইসি কমিটির অবহেলার কারণে কাজ হচ্ছে না। তিনি আরো বলেন, জগন্নাথপুরে এবার বাম্পার বোরো ফলনের আশা রয়েছে। জমিতে ধানের থোড় বের হচ্ছে। আগামি ১৫-২০ দিনের মধ্যে ধান কাটা শুরু হয়ে যাবে। এর মধ্যে গত কয়েক দিন জগন্নাথপুরে কম-বেশি বৃষ্টি হচ্ছে। এভাবে বৃষ্টি হলে নদীতে পানি বেড়ে অকাল বন্যা হতে পারে। নদীতে অকাল বন্যা হলে বেড়িবাঁধের উপর দিয়ে হাওরে পানি ঢুকে পড়বে। তাই দ্রুত বাঁধের কাজ শেষ করতে তিনি কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি আরো বলেন, গত বছর অকাল বন্যায় নলুয়ার হাওর তলিয়ে পাকা-আধা পাকা ধান তলিয়ে গিয়েছিল। এখান থেকেও কর্তৃপক্ষের শিক্ষা নেয়া উচিত। এবার যাতে কৃষকরা তাদের কষ্টার্জিত সোনার ফসল গোলায় তুলতে পারেন, সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে আরো সতর্ক হতে হবে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) এসও মো. মোসাদ্দেক বলেন, আমি এখন নলুয়ার হাওর বেড়িবাঁধের কাজ তদারকি করছি। তিনি বলেন, বাঁধের প্রায় ৬০ থেকে ৭০ ভাগ কাজ শেষ হয়ে গেছে। আগামি ১৫ দিনের মধ্যে সম্পূর্ণ কাজ শেষ হয়ে যাবে। তিনি আরো বলেন, নদীতে এখন ৫ থেকে ৬ ফুট পানি বাড়লেও হাওর তলিয়ে যাবে না। সুতরাং কৃষকদের শঙ্কিত হওয়ার কোন কারণ নেই।