অনলাইন ডেস্ক রিপোর্ট:সোমবার (৩১ আগস্ট) দুপুরে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পাবনা-৪ আসনের উপ-নির্বাচনে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী হাবিবুর রহমান হাবিব মনোনয়ন ফরম জমা দেন। এসময় উপস্থিত সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন রিজভী।
পরে আরেকজন মনোনয়নপ্রত্যাশী আহসান হাবিব দলীয় মনোনয়নপত্র রিজভীর হাতে জমা দেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন পাবনা-৪ আসনে বিএনপি এর মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব, বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সহ-প্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আবদুর রহীম, ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা কাজী ইফতেখায়রুজ্জামান শিমুল প্রমুখ।
পাবনা-৪ আসনের উপ-নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নপত্র জমা দিচ্ছেন আহসান হাবিব।
রিজভী বলেন, প্রতিটা মুহুর্তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টেনশনে থাকে। প্রতিমুহূর্তে তার একটা আতঙ্ক থাকে কোনো দিক দিয়ে যদি জনগণের বিস্ফোরণ হয়ে যায়।
ভোটকেন্দ্রে যদি জনগণের একটা ফ্লো তৈরি হয়ে যায় তাহলে উনারা তো টিকতে পারবেন না।
তিনি বলেন, সেই কারণে রাষ্ট্রযন্ত্রকে তারা সর্বোচ্চ প্রয়োগ করে এবং কখনো কখনো সেটাতো স্বস্তি না পেয়ে পার্সোনালি শারীরিকভাবে আঘাত করে।
তার শিকার হয়েছিলেন আমার পাশে বসে থাকা হাবিবুর রহমান হাবিব ভাই।
রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা আমাদের চিরাচারিত ভোট, নির্বাচন, গণতন্ত্র এটা পাল্টে দিয়েছেন।
এখন তো দিনের ভোট রাত্রে হয়। ভোটাররা তো সেখানে যান না। নির্বাচনের দিন সেখানে বিচরণ করে চতুষ্পদী প্রাণী।এগুলোর ঐতিহ্য তৈরি করেছে আওয়ামী লীগ।
পাবনা তে কতটুকু সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে সেটা বলা খুব মুশকিল।
বিএনপির এই নেতা বলেন, রাষ্ট্রশক্তি, রাষ্ট্রযন্ত্র পুরোটাই ব্যবহার করা হয় ভোটের বিরুদ্ধে।
সিস্টেমটা হয় ভোটের একটা তারিখ থাকে কিন্তু ভোটের দিন ভোটের বিরুদ্ধে পুরোটাই রাষ্ট্রশক্তিকে ব্যবহার করা হয়।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সম্পূর্ণ প্রস্তুত থাকে সরকার যেটা চায় সেটা পরিপূর্ণ করার জন্য।
তিনি বলেন, বিএনপি পাবনা ৪ এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা দিয়েছে আন্দোলনের অংশ হিসেবে।
রিজভী বলেন, আমরা এর মধ্যদিয়ে আমাদের স্পেসকে বাড়ানোর চেষ্টা করব।
এখানে বাঁধা দিলে সেই বাঁধাকে অতিক্রম করে ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের যাতে করে নিয়ে যাওয়া যায় সেই সাহস নিয়ে যিনি আমাদের প্রার্থী হবেন তিনি কাজ করবেন।
‘বিএনপি নির্বাচনে হারার আগেই হেরে যায়’ সোমবার সকালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায়
বিএনপির এই নেতা বলেন, আমরা যদি হারার আগেই হেরে যাই তাহলে উনারা কেনো রাষ্ট্রক্ষমতাকে কব্জা করে?
তারা পরাজিত হওয়ার আগেই নিজেদেরকে বিজয়ী ঘোষণা করেন।
জনগণ কী রায় দেবেন সেটার অপেক্ষা না করে নিজেদেরকে আগেই বিজয়ী ঘোষণা করেন।
ওই পদ্ধতিগুলো অবলম্বন করে অর্থাৎ দিনের ভোট রাত্রে করে অথবা ভোটারদেরকে ভোটকেন্দ্রে না আসতে দিয়ে তারা আগেই যেটা সেট করে রাখে যাদের যাদেরকে বিজয়ী করবে তাদের দলের লোককে সেটা করে রাখে।
২০০৯ সালের পর থেকে যতগুলো জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়েছে, স্থানীয় সরকার নির্বাচন গুলোতেও তারা এইসব করে আসছে।
কারণ ওনারা যাদেরকে নমিনেশন দেবে সেইতো এমপি। ওনাদের তো ভোটের দরকার নেই।
তারা সেট করে রাখে আমরা এনাকে এমপি করে নিয়ে আসবো।
এমপি বানানোর জন্য যে প্রতিযোগিতা যে প্রক্রিয়া তার সবগুলোকে বিদায় করে দিয়েছে তারা।
আরো পড়ুন: পাবনা-৪ আসনে বিএনপির মনোনয়ন ফরম বিতরণ কাল
রিজভী বলেন, তারা যেটা সিলেকশন দেবে নির্বাচন কমিশন সেটাকে ডিক্লেয়ার করে দেবে। আমাদেরটা হচ্ছে শেষ পর্যন্ত লড়াই করা।
আমরা যদি হেরে যাই তাহলে হাবিবুর রহমান হাবিবের মত একজন জাতীয় পর্যায়ের নেতা সে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষতবিক্ষত শরীর নিয়ে শেষদিন পর্যন্ত লড়াই করেছেন পাবনা থেকেছে।
তিনি বলেন, আমাদের দল থেকে যেই নমিনেশন পাক না কেনো তিনি শেষদিন পর্যন্ত লড়াই করবেন।
পুলিশ আমাদের নেই, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নেই, আওয়ামী লীগের ক্যাডারদেরকে অস্ত্র দেওয়া হচ্ছে তারা ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
ইতিহাসের পটভূমি উল্লেখ করে রিজভী বলেন, আগেও যখন ডিক্টেটররা শাসন করতো আইয়ুব খান, এরশাদ তখনো দেখা গেছে যে, প্রার্থী বা এই লেবেলের বড় নেতাদের গায়ে হাত দেয়া হতো না।
কিন্তু শেখ হাসিনা সেই কালচার গুলোকেও ধ্বংস করে দিয়েছে।
তার ক্ষমতা আগলে রাখার জন্য কোর্ট ও নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে অর্ধেকের মত বিএনপির প্রার্থীকে বাতিল করে দিয়েছে এবং কাউকে কাউকে কারাগারে রেখেছে।
তিনি আরো বলেন, নির্বাচনকে নিয়ে আওয়ামী লীগ যে নষ্টামি করছেন সেই নষ্টামি গুলোকে নিশ্চিত করার জন্য ওবায়দুল কাদের সাহেবরা এই সমস্ত নোংরা কথা বলছেন।
আওয়ামী লীগ নির্বাচনে হেরে যায় বলেই দিনের ভোট রাত্রে করে।
এখন তো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে ব্যালট বাক্স পূরণ করলেই তো নিজেরা বিজয়ী হওয়া যায় অবৈধভাবে।