খায়রুল খন্দকার টাঙ্গাইল::টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে ছফুরা বেগম(৪২) নামের এক গৃহবধূকে নৃশংসভাবে হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়েছে। নিহত ছফুরা বেগম উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের গর্জনাপাড়া গ্রামের প্রবাস ফেরত লতিফ মিয়ার স্ত্রী। শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের গর্জনাপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতের ছেলে সাব্বির হোসেন বলেন, দুপুর একটার দিকে মাদ্রাসা থেকে বাড়িতে ফিরে ঘরে ঢুকে দেখতে পাই একপাশের বিছানায় গলায় গামছা বাঁধা এবং মুখে টেপ লাগানো মায়ের নিথর দেহ পরে আছে, পাশের বিছানাতেই উলঙ্গ অচেতন অবস্থায় পরে আছে বাবার দেহ । পরে তার ডাক চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে তার বাবাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায় এবং পুলিশে খবর দেয়। বর্তমানে সে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাদীন রয়েছে।
নিহতের মামা আব্দুস ছামাদ বলেন, ভাশুর রশিদ মিয়া এবং ননদের স্বামী দুলালের সাথে নিহত ছফুরার পরকীয়ার সম্পর্ক আছে বলে তার স্বামী সন্দেহ করতো। এনিয়ে প্রায়ই তাদের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকতো। সন্দেহে শেষ পর্যন্ত মেয়েটাকে ওরা হত্যা করে ফেলবে ভাবতেই পারিনি।
নিহত ছফুরার মামাতো ভাই প্রতিবেশী নুরু মিয়া বলেন, সকাল সাড়ে দশটার দিকে ছফুরা আমাদের বাড়িতে আসে এবং বলে আজ সকালে ঘুম থেকে উঠেই ঝগড়া শুরু করেছে। অকথ্য ভাষায় গালাগাল করছে। তার স্বামী তাকে পরপুরুষের সাথে অবৈধ সম্পর্ক আছে মনে করে ঝগড়া শুরু করে।
আমি বলি দুলাভাইকে বুঝিয়ে বলবো, ছফুরা আমার কথা শুনে এগারোটা নাগাদ বাড়ি চলে আসে। এর কিছুক্ষণ পরেই এই খবর শুনতে পাই।
গোপালপুর সার্কেলের এএসপি সোহেল রানা, ঘাটাইল থানার অফিসার ইনচার্জ আজহারুল ইসলাম সরকার পিপিএম, সাগরদিঘী তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মনিরুল ইসলাম, ধলাপাড়া পুলিশ ফাঁড়ীর উপপরিদর্শক এসআই সিদ্দিকুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ঘাটাইল থানার অফিসার ইনচার্জ আজহারুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক।
খবর পেয়ে পুলিশ সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে লাশ উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। স্ত্রীকে হত্যার পরে স্বামী আত্মহত্যার চেষ্টা করে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এটা একটি হত্যাকাণ্ড বলে মনে হচ্ছে।
এ ঘটনায় রাতেই নিহতের ভাই বাদী হয়ে নিহতের স্বামী লতিফ মিয়াকে একমাত্র আসামী করে ঘাটাইল থানায় মামলা দায়ের করেছেন ।ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে। দ্রুত সুষ্ঠ তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।।