1. admingusar@gmail.com : admingusar :
  2. crander@stand.com : :
  3. bnp786@gmail.com : editor :
  4. sylwebbd@gmail.com : mit :
  5. zia394@yahoo.com : Nurul Alam : Nurul Alam
  6. mrafiquealien@gmail.com : Rafique Ali : Rafique Ali
  7. sharuarprees@gmail.com : Sharuar : Mdg Sharuar
  8. cardgallary17@gmail.com : Shohidul Islam : Shohidul Islam
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৩৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :

বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু, অভিযোগ বাড়ছে।

  • আপডেটের সময় : সোমবার, ১১ মে, ২০২০

শেয়ার ও লাইক দিয়ে সাথে থাকুন এবং প্রতিদিনের সংবাদ পেতে সাথে থাকুন ।

 

নতুন আলো অনলাইন ডেস্ক রিপোর্ট: করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। একই সঙ্গে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যাও। করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন হাসপাতালে আলাদা ইউনিট খোলা হয়েছে। আবার সরকার নির্দিষ্ট ক’টি হাসপাতালকে করোনা হাসপাতাল হিসেবে ঘোষণা করেছে। কিন্তু তারপরও করোনা রোগীরা চিকিৎসা পাচ্ছেন না- এমন অভিযোগ রয়েছে।  অন্যদিকে করোনা রোগী ছাড়া অন্যকোনো রোগীও চিকিৎসা পাচ্ছেন না। এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতাল ঘুরেও তারা ভর্তি হতে পারছেন না। রোগীকে নিয়ে এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে ঘুরতে ঘুরতে এম্বুলেন্সেই মারা যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। সর্বশেষ বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে অতিরিক্ত সচিব গৌতম এইচ সরকারের।

তিনি কিডনি জটিলতায় অসুস্থ ছিলেন বেশ কয়েকদিন ধরে। অসুস্থতা নিয়ে ঘুরেছেন রাজধানীর একের পর এক ৯টি হাসপাতালে। কেউ চিকিৎসা  দিতে রাজি হয়নি। কোনো জায়গায় চিকিৎসা না পেয়ে শেষে বৃহস্পতিবার কোভিড-১৯ রোগীদের জন্য নির্দিষ্ট কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল এই আমলাকে। পরে শনিবার দুপরে তার মৃত্যু হয়। তার মেয়ে ডা. সুস্মিতা এইচ জানিয়েছেন ,তার বাবার কোভিড-১৯ এর কোনো উপসর্গ না থাকলেও অন্য কোনো উপায় না পেয়ে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তিনি অভিযোগ করে বলেন, বাবার আইসিইউ সাপোর্টটা খুব দরকার ছিল। কিন্তু তা পাওয়া যায়নি। বাবার চিকিৎসাই হল না, তিনি মারা গেলেন। আমি ডাক্তার হয়েও কিছু করতে পারলাম না। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাকে কুর্মিটোলা হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও তার বাবা  কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত কি না, তা জানার চেষ্টাও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ করেনি। এতো গুলো হাসপাতাল ঘুরলাম, কারো মানবতা বোধ জাগ্রত হয়নি। ডা.সুস্মিতা নিজেও ৩৩৩ হটলাইন নম্বর থেকে সরকারি স্বাস্থ্য সেবা দিচ্ছেন।

গত ১৯ এপ্রিলের ঘটনা। রাজধানীর ১১টি হাসপাতালে স্বামীকে নিয়ে ঘুরেছেন মিনু বেগম। কোনো হাসপাতালেই চিকিৎসা হয়নি স্বামী আমিনুলের (৫২)। মিনু বেগমের কাকুতি মিনতি কেউ শুনেনি। সর্বশেষ কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল থেকেও ফিরিয়ে দেয়া হয় তাকে। তখন দিন ঘনিয়ে সন্ধ্যা। অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে রওনা দেন সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের উদ্দেশে। ওই হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই মারা যান আমিনুল। রাজধানীর মিরপুর ১১-এর বাসিন্দা আমিনুল মারা যাওয়ার আগে দুই সপ্তাহ ধরে শ্বাসকষ্ট ও গ্যাস্ট্রিকের যন্ত্রণায় ভুগছিলেন। পরিবারের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আমিনুল অ্যাজমার রোগী ছিলেন। মাঝেমধ্যেই শ্বাসকষ্টের সমস্যা হতো। স্বজনদের অভিযোগ রাজধানীর ১১টি হাসপতালে চিকিৎসার জন্য ঘুরলেও করোনা সন্দেহে কেউ তার চিকিৎসা দিতে রাজি হননি। মিনু বেগম বলেন, আমার স্বামীর অ্যাজমার সমস্যা অনেক আগে থেকেই। গত দশ পনেরো দিন ধরে তার অ্যাজমা বেড়ে যায়। যার চিকিৎসার জন্য এই শহরে এগারোটি হাসপাতালে গিয়েছি। সবাই করোনা সন্দেহে আমার স্বামীর চিকিৎসা করলো না। আমার স্বামী শেষ পর্যন্ত বিনা চিকিৎসায় মারা  গেলো। আমি জানতাম কুর্মিটোলায় করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা করা হয়। কিন্তু সেখানে যাওয়ার পর তারা বলছে টেস্ট করিয়ে আনার জন্য। এখানে নাকি শুধু পজেটিভ রোগীর চিকিৎসা করা হয়। আমি তাদের বলছি আপনারা টেস্ট করান। এখানে তো  টেস্ট করানো হয়। কিন্তু তারা  টেস্ট না করে আমাকে  সোহরাওয়ার্দী হাসাপাতালে  যেতে বলেন।  সেখান থেকে  যেতে  যেতেই আমার স্বামী রাস্তায় মারা যায়। পরে আমার স্বামীর করোনা টেষ্ট ছাড়াই খিলগাওয়ে দাফন করা হয়।

পহেলা এপ্রিলের ঘটনা। হাসপাতাল থেকে হাসপাতাল। ছয়টি হাসপাতালে বৃদ্ধা মাকে নিয়ে ছুটেছেন সন্তানরা। কিন্তু কোনো হাসপাতলই রাখেননি মাকে। যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন মা। পাশে অসহায় সন্তান। দিকবিদিক ছুটাছুটি করছেন। এর-ওর হাতে  ধরেছেন। অনুনয়-বিনয় করছেন। কিন্তু কোনো হাসপাতালের কারোই মন গলছে না। সবার সন্দেহ করোনা রোগী। অবশেষে মগবাজারের রাশমনো হাসপাতাল আশা দিয়েছিলো। ভর্তি নেয়া হবে। হাসপাতালে পৌঁছানোর পর শুরু হয় গড়িমসি। ফেলে রাখা হয় ঘণ্টাখানেক। শেষ পর্যন্ত তিনিও বিনা চিকিৎসাতেই মারা যায়। এ মৃত্যুর শিকার হয়েছিলেন অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষিকা মাহমুদা খানম  (৭২)। অভিযোগ রয়েছে, রাত সাড়ে দশটার দিকে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর পর নিচতলায় মরদেহ রেখে সটকে পড়েন হাসপাতালের চিকিৎসক-স্টাফরা। ওই শিক্ষিকার ছেলে সৈয়দ শাহীন বলেন, মগবাজারের এই হাসপাতালটিতে ফোন দিলে তারা আইসিইউ খালি আছে বলে জানান।  কিন্তু হাসপাতালে আসার পর এমন অবস্থা দেখে তারা বলেন, আইসিইউ খালি নেই। তারা আমার মাকে  প্রাথমিক ট্রিটমেন্টও দেয়নি। পরে ওই দিন রাতে সাড়ে দশটায় তার মৃত্যু হয়। হতভাগ্য সন্তনরা জানান, দীর্ঘদিন শ্বাসকষ্টের রোগী ছিলেন তাদের মা। করোনার এ সময়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ধর্ণা দিলেও তাকে  কেউই চিকিৎসা দিতে রাজি হয়নি।

দেশে করোনা শনাক্ত হওয়ার পর একের পর অসুস্থ রোগী বিনা চিকিৎসায় মারা যাওয়ার অভিযোগ ওঠছে প্রতিনিয়তশত অনুনয় করেও  হাসপাতালে চিকিৎসা পাচ্ছে না রোগীরা। ফলে রোগীদের অসহায় স্বজনরা এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ছুটছেন চিকিৎসা পাওয়ার আশায়। শুধু সাধারণ রোগীই নয়, এ থেকে বাদ যাচ্ছে না সরকারী বড় কর্তারাও।  এমন একজন  নড়াইলের নড়াগাতি থানার নারী ওসি রোকসানা খাতুন। তার অভিযোগ গত মাসে তার স¦ামী ডাক্তারদের অবহেলায় মারা গেছেন। তার স্বামীকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে পারলেও হাসপাতালের চিকিৎসক নার্সরা করোনা ভয়ে তার স্বামীর কাছে আসেননি। তিনি বলেন , হাসপাতালে ছটফট করলেও অক্সিজেন পর্যন্ত দেয়া হয়নি। পুলিশ এতো সেবা দিচ্ছে অথচ পুলিশ পরিবার আজকে সেবা  পেল না।  স্বামী পাবনার সুজানগরের আহসানুল হক (৫০)। থাকতেন যশোর কোতয়ালি মডেল থানা স্টাফ কোয়ার্টারে। চাকরি করতেন  বেনাপোলের রেলওয়েতে।

একটি বেসরকারী হাসপাতালের চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমাদের হাসপাতালে স্বাভাবিক সময়ে প্রায় দেড়’শ চিকিৎসক বসেন। কিন্তু করোনা আসার পর আমরা মাত্র পনেরো বিশজন চিকিৎসক আছি। ফলে চিকিৎসক সংকটও রয়েছে।রোগীদের চিকিৎসা না পাওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, দেখেন নরমালি আমাদের চিকিৎসক সংকট। তাছাড়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা দিতে আগ্রহী না। তাহলে আমরা কি করবো। হয়তো কর্তৃপক্ষ প্রত্যক্ষভাবে কোনো নির্দেশনা দেয়নি কিন্তু হাসপাতালগুলোর পরিবেশই এমন করে রেখেছে যা  রোগীবান্ধব না। ফলে অনেক ক্ষেত্রে বেশী অসুস্থ রোগীরা চিকিৎসা পাচ্ছে না।

বাংলাদেশে প্রথম করোনা ভাইরাস সংক্রমণ শনাক্তের পর গত দুই মাসে অনেকে এভাবে বিনা চিকিৎসায় মারা গেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সরকারি  বেসরকারি হাসপাতালগুলোর দৃশ্য প্রায় একই। কোনো জায়গায় মিলছে না চিকিৎসা। কিছু খবর গণমাধ্যমে ওঠে আসলেও বেশীর ভাগই থাকছে লোকচক্ষুর আড়ালে। তবে কেউ কেউ সামাজিক মাধ্যমে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে ক্ষোভ জানাচ্ছেন। এ থেকে বাদ যায়নি স্বয়ং চিকিৎসকরাও। অনেক চিকিৎসক নিজেও তার স্বজনদের চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে পড়তে হয়েছে ভোগান্তিতে। সবশেষ তাদের স্বজনদের মৃত্যুর ঘটনাও আছে।

এসব বিষয়ে  সোহারোওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া বলেন, ‘সরকারি হাসপাতাল নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। সব হাসপাতালেই রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। আমাদের দেশের লোকজন যে কারণেই হোক প্রথমে প্রাইভেট ক্লিনিকে যায়। আর চিকিৎসা না  পেয়ে এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ঘুরে। বিষয়টি খুব দু:খজনক। তবে প্রথম প্রথম এমন অভিযোগ আসলেও এখন তো এমনটা তো শুনেনি। আমি যতটুকু জানি, সরকার কোভিড ও ননকোভিড হাসপতাল এক করে ফেলবে। ফলে এই ধরনের সমস্যার আর হবে না বলে আশা করি।  এ ব্যাপারে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ বলেন, হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যুর অভিযোগ প্রায় শুনছি। ।কিন্তু এমনটা  হওয়ার কথা নয়। সরকারিভাবে নির্দেশনা রয়েছে সকল হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে হবে। হাসপাতালগুলোর কাজ তো চিকিৎসা নিশ্চিত করা। অমানবিক হওয়া নয়। তবে আমার কাছে মনে হয় সকল হাসাপাতালগুলো যদি করোনা চিকিৎসা করা হয় এবং সকল আলাদা ইউনিট করা হয় ,তাহলে এমন অভিযোগ আসবে না। রোগীদের চিকিৎসা দিতে বাধ্য থাকবে হাসপাতালগুলো।

সুত্র – মানবজমিন

Comments are closed.

এই ধরণের আরো খবর

বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস

সর্বমোট

আক্রান্ত
সুস্থ
মৃত্যু
সূত্র: আইইডিসিআর

সর্বশেষ

আক্রান্ত
সুস্থ
মৃত্যু
স্পন্সর: একতা হোস্ট
© All rights reserved © 2021 notunalonews24.com
Design and developed By Syl Service BD