সিলেট থেকে সৈয়দ মুহিবুর রহমান মিছলু:বেগম রোকেয়া দিবসে সিলেট জেলা সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট এর উদ্যোগে বুধবার (৯ ডিসেম্বর) বিকাল ৪টায় আম্বরখানাস্থ দলীয় কার্যালয়ে একটা আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়ে। সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম সংগঠক অজিতা নায়েক এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন সিলেট জেলা বাসদ সমন্বয়ক আবু জাফর, প্রসব জ্রোতি পাল, ছাত্র ফ্রন্ট মহানগর আহ্বায়ক সনজয় শর্মা প্রমুখ।
আলোচনা সভায় বক্তা বলেন, কোন একটা সমাজের অনিয়ম, অসঙ্গতি, কুযুক্তি, অন্যায়, বৈষম্য যাঁরা মেনে নিয়ে, মানিয়ে নিয়ে জীবন পার করে দেন না, যাঁরা এই অবস্থাহাগুলোকে পাল্টে দিতে চান বা দিতে পারেন তাঁরা হয়ে উঠেন ওই সমাজের ঐ সময়ের শ্রেষ্ঠ মানুষদের একজন। বেগম রোকেয়া ছিলেন তেমনই একজন সমাজ সংস্কারক;নারীমুক্তি আন্দোলনের পথিকৃৎ। নারীমুক্তির যে আকুতি রোকেয়া তাঁর সাহিত্যকর্ম ও জীবনসংগ্রামের মধ্যে রেখে গেছেন সেখানে তিনি অন্যন ও বিশিষ্ট। কারণ নারী শিক্ষাকে তিনি ব্রত হিসেবে নিয়েছিলেন নারীমুক্তির পথে প্রশস্ত করার লক্ষে।
সাম্প্রতিক নারী নির্যাতন ও বৈষম্য ক্রমবর্ধমান চিত্র পরিষ্কারভাবে আমাদের দেখিয়ে দেয় রোকেয়ার জীবন সংগ্রাম এবং চিন্তা, শিক্ষা ও সাহিত্যকর্ম থেকে কতটা দুরত্বে অবস্থান করছি।বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে নারী নির্যাতন অতীতের যেকোন সময়ের তুলনায় বেড়েছে। সরকারের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের হিসেবে নারী থশিশু নির্যাতনের প্রতিকার চেয়ে মামলাগুলোর মধ্যে ৩.৫৪শতাংশের রায় আদালতে ঘোষিত হয়েছে। আরও এ ঘোষিত রায়ের মধ্যে দন্ডাদেশ দেয়া হয়েছে ০.৩৭ শতাংশের ক্ষেত্রে।অপরাধীদের ৯৯.২৩ শতাংশ কোন শাস্তি পায়নি।এভাবেই তৈরী হচ্ছে বিচারহীনতার রেওয়াজ।
বক্তারা বলেন, এই নির্মম বাস্তবতা ও পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার পরিবর্তনে, সমাজের সকল বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে, নারীমুক্তির আন্দোলনে বেগম রোকেয়া আজও প্রেরণার উৎস।। বেগম রোকেয়ার সেই আহবান ‘জাগো গো ভগিনী!’ কে ধারণ করে, সমস্ত শোষণ, নির্যাতন, অন্ধত্ব, কুসংস্কার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই; নারী-পুরুষের মিলিত সংগ্রাম গড়ে তুলি; মনুষ্যত্ব, সভ্যতা, স্বাধীনতা ও মানবতার দাবি আদায় করি এই আহবান জানান।