সৈয়দ মুহিবুর রহমান মিছলু::নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের মালিকানাধিন হসেম ফুড এন্ড বেভারেজের কারখানায় অগ্নিকান্ডে অর্ধশতাধিক শ্রমিক হত্যার বিচার এবং নিহত শ্রমিকদের পরিবার প্রতি আজীবন আয়ের সমান ক্ষতিপুরণ নিশ্চিত করা, আহত শ্রমিকদের চিকিৎসা -ক্ষতিপূরণ-পুনর্বাসনের দাবি জানিয়েছে সিলেট জেলা বাম গণতান্ত্রিক জোট।
রোববার, ১১ জুলাই এক বিবৃতিতে সিলেট জেলা বাম গণতান্ত্রিক জোট সমন্বয়ক বাসদ (মার্কসবাদী) সিলেট জেলার আহবায়ক কমরেড উজ্জ্বল রায়, বাসদ জেলা সমন্বয়ক আবু জাফর, সিপিবি জেলা সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন সুমন, ওর্য়ার্কাস পার্টি (মার্কসবাদী) জেলা সভাপতি সিরাজ আহমদ, বাসদ (মার্কসবাদী) সিলেট জেলার সদস্য এডভোকেট এডভোকেট হুমায়ূন রশীদ সোয়েব ও বাসদ জেলা সদস্য প্রণব জ্যোতি পাল এক বিবৃতিতে এই দাবি জানান।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, সজীব গ্রুপের মালিকানাধিন ্ওয়েবসাইটে দেওয়া আছে কোম্পানিটি ৩০ বছর যাবত ব্যবসা করছেন। কোম্পানিটি এশিয়া, আফ্রিকা, পূর্ব এশিয়া ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পণ্য রপ্তানি করেন। অগ্নিকান্ডের পরে জানাযায় ৬ তলা কারখানা ভবনের কোন ফ্লোরে অগ্নিনির্বাপনের ব্যবস্থা নেই। অগ্নিকান্ডের সময় চতুর্থ তলার জরুরী নির্গমণের পথটি ছিল তালাবদ্ধ। নিহত শ্রমিকদের অধিকাংশই শিশু শ্রমিক। আইন অনুযায়ী কারখানার প্রতিটি ফ্লোরেই জরুরী নির্গমনের রাস্তা, অগ্নিনির্বপনের ব্যবস্থা এবং উৎপাদনের সময় প্রতিটি গেট খোলা থাকতে হবে। আইন লঙ্ঘন এবং অব্যবস্থাপনার কারনেই এতজন শ্রমিককে নির্মমভাবে প্রাণ হারাতে হয়েছে। ফলে অগ্নিকান্ডে ৫২ জনের অধিক শ্রমিকের মৃত্যু কোন দৃর্ঘটনা নয়, এটা অবহেলাজনিত এবং কাঠামোগত হত্যাকান্ড। শিল্প কারখানা প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনার জন্য ডাইফ, ফায়ার সার্ভিস, স্থাপনা তদারকি সংস্থা, পরিবেশ অধিদপ্তর, স্থানীয় প্রশাসনসহ সরকারের অনেকগুলি দপ্তরযুক্ত। নেতৃবৃন্দ প্রশ্ন রাখেন, অগ্নিনির্বাপনের ব্যবস্থা ছাড়া, বিল্ডিং কোড অনুসরণ ছাড়া, আইন না মেনে কারখানা পরিচালনার অনুমোদন কিভাবে পেল?
নেতৃবৃন্দ বলেন, কারখানা ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের সাথে সাথে সংশ্লিষ্ট এলাকার পরিদর্শনের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণও সমভাবে দায়ি। নেতৃবৃন্দ, প্রশাসনিক তদন্ত নয় বিচার বিভাগীয় তদন্তপূর্বক দায়িত্ব অবহেলার জন্য দায়ি প্রত্যেককে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার ও বিচার করার দাবি জানান। নেতৃবৃন্দ, নিহত ও নিখোঁজ শ্রমিকদের পরিবার প্রতি আজীবন আয়ের ভিত্তিতে ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং আহত ও ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের জন্য তাৎক্ষণিক সহায়তা, বিনামূল্যে চিকিৎসা এবং যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবি জানান।
একই সাথে নেতৃবৃন্দ লকডাউনে সকল শ্রমজীবী মানুষদের পর্যাপ্ত ত্রাণ সহযোগিতা দেয়ার আহ্বান জানান।