কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদন না পেলে মেঘালয় রাজ্য সরকার কোনো বিদেশিকে এভাবে নিজ দেশে পাঠিয়ে দিতে পারবে না। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে আমার বিষয়ে গণমাধ্যমে অনেক কথাই বলেছে।
কিন্তু আমি বিশ্বাস করি যে বাংলাদেশ সরকার এ বিষয়ে উদ্যোগ নিলে আমার দেশে ফেরা সময়ের ব্যাপার মাত্র’, যোগ করেন তিনি।
‘আমার দেশে ফেরা সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে’ দাবি করে সালাউদ্দিন বলেন, ‘এখানে আমার হাতে কিছুই নেই। আমি যে কোনো সময় দেশে ফেরার জন্য প্রস্তুত এবং এই কথা আমি বারবার চিঠি দিয়ে তাদের জানিয়েছি।’
প্রত্যাবাসনবিষয়ক দ্বিপক্ষীয় চুক্তির বিষয়ে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের এ বিষয়ক চুক্তি আছে। ভারত এই চুক্তি সংশোধন করিয়ে এমন ধারা যোগ করেছে যে, কোনো ভারতীয় বাংলাদেশে অপরাধ করে বিচারাধীন থাকলেও ভারত চাইলে বাংলাদেশ তার বিচার স্থগিত করে ফেরত পাঠাবে। কিন্তু বাংলাদেশ এমন কিছু চায়নি।’
ভারতেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন সালাহউদ্দিন। এর জন্য মেঘালয়ের বাইরে যেতে পেরেছিলেন কিনা, জানতে চাইলে তিনি বলেন, চিকিৎসার জন্য মেঘালয়ের বাইরে যেতে অনুমতির প্রয়োজন হয়নি। ট্রাভেল ডকুমেন্ট দিয়েই দিল্লির বিভিন্ন হোটেলে থাকতে পেরেছি। হোটেলগুলো একটু গড়িমসি করলেও শেষ পর্যন্ত সেখানে থেকে চিকিৎসা নিয়ে ফিরতে পেরেছি।
সালাহউদ্দিন আহমেদের পাসপোর্ট ও ট্রাভেল ডকুমেন্টের মেয়াদ শেষ এবং আদালতের রায়ে তিনি খালাস পেয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে বর্তমানে ভারতে তার অবস্থান কি অবৈধ?
এ প্রশ্নের উত্তরে সালাহউদ্দিন বলেন, এখন আমি অবৈধও না, আবার পুরোপুরি বৈধভাবে আছি সেটিও বলতে পারব না। কারণ আমার কাছে কোনো ডকুমেন্ট নেই, কিন্তু আমি এর জন্য দায়ী না।
২০১৫ সালের ১০ মার্চ ঢাকা থেকে নিখোঁজ হন বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন। পরে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ে ‘উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘোরাফেরা’ করার সময় ওই বছরের ১১ মে তাকে আটক করে শিলং পুলিশ। তার নামে অবৈধ অনুপ্রবেশের মামলা হয়।
তিনি শিলং পুলিশকে জানান, গোয়েন্দা পরিচয়ে ২০১৫ সালের ১০ মার্চ তাকে তার উত্তরার বাসা থেকে তুলে নেওয়া হয়। একটি প্রাইভেট কারে তাকে শিলং নেওয়া হয়। কিন্তু গাড়িটি কোথা থেকে ছেড়েছিল বা গাড়িতে আর কে বা কারা ছিলেন, তা তিনি বলতে পারেননি।
২০০১ সালে কক্সবাজার থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন সালাহউদ্দিন। তিনি বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী ছিলেন।
মেঘালয়ে যখন আটক হন, তখন তিনি বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ছিলেন। ভারতের জেলে থাকাকালে বিএনপি তাকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য করে।
২০১৮ সালের ২৬ অক্টোবর অবৈধ অনুপ্রবেশের মামলা থেকে তাকে খালাস দেন ভারতের একটি আদালত। সেই সময় তিনি বলেছিলেন— ‘আমি ন্যায়বিচার পেয়েছি। দ্রুত দেশে ফিরে যেতে চাই।’
আদালতের এই রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করলে সেই রায়েও খালাস পান তিনি।