নিজস্ব প্রতিবেদক,জগন্নাথপুর::
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের বাগময়না আটহাল গ্রামের ১২ বছর পূর্বের চাঞ্চল্যকর রেজান হত্যার ১ম আসামী মৃত মোক্তার উদ্দিন কনাই এর ছেলে ১ম আসামী নুরুল হক কে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গ্রেফতার করেছে জালালাবাদ থানা পুলিশ।পরে জগন্নাথপুর থানার এসআই কবির উদ্দিনের কাছে আসামীকে সোর্পদ করা হয়।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ২০০৭ সালের রেজান উদ্দিন হঠৎ করে নিখোঁজ হয়ে যান, বহু খোজ খবর নেওয়ার তিনদিন পর বাউধরণ গ্রামের হাওরে পানিতে ভাসমান লাশ পাওয়া যায়। লাশ উদ্ধার করে জগন্নাথপুর থানা পুলিশ। কিন্তু রহস্য জনক কারণে লাশের ময়না তদন্ত ছাড়াই দাফন করা হয়। তবে তখন থেকেই তার মৃত্যুকে ঘিরে সন্দেহ ছিল পরিবার ও গ্রামের অনেকের মাঝে।
এ ব্যাপারে মৃত রেজান উদ্দিনের ছেলে নর্থইষ্ট ইউনিভার্সিটিতে এলএলবিতে পড়ুয়া ছাত্র তোফায়েলের বলেন আমি তখন সপ্তম শ্রেনীতে পড়ি। আমি ও আমার বড় ভাই সোহেল আহমদ এসব বিষয় তেমন বুঝতাম না। দাদা চাচাদের কাছে শুনেছি চাচাতো ভাই নুরুল হক ৩ লাখ টাকা প্রলোভন দেখিয়ে ছিল আমাদের গ্রামের বিশিষ্ট মুরুব্বি হাজী মো. সুন্দর আলী চাচা কে আমার বাবাকে হত্যা মামলা দিয়ে মামলা করে ফাঁসানোর জন্য। পরিবারের কেউ তার কথায় সায় দেননি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানান নিজের অপরাধ ধামাচাপা দিতে নুরুল হক তখন সুন্দর আলীকে ফাঁসাতে চেয়েছিলেন।
সুন্দর আলীকে ফাঁসানোর কারণ উদঘাটন করতে গিয়ে জানা যায়, তাহাদের ৫৬ শতক জায়গাকে নিয়ে পুর্বেও বিরোধ ছিল দুই পরিবারের মধ্যে। এই নিয়ে শালিস বৈঠকে রেজান উদ্দিনের পক্ষে রায় দেওয়া হয়। রায়ের কিছুদিন পরেই ঘটে রেজান উদ্দিনের মৃত্যুর ঘটনা। রায় ও মৃত্যু এই দুইয়ে এখন প্রশ্নবোধক চিহ্ন হয়ে দাড়িয়েছে অনেকের কাছে।
স্থানীয়রা আরো জানান, বিগত কয়েক বছর ধরে রেজান উদ্দিনের ছেলে ও নুরুল হকের মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এর জের ধরে উভয় পক্ষের মধ্যে সংর্ঘের ঘটনা ঘটে। সংর্ঘষের নিউজ কালেকশন করতে বিভিন্ন মিডিয়ার সাংবাদিকগন সংবাদ করতে নুরুল হকের বাড়ীতে যান, এক সময় সাংবাদিকদের সামনে নুরুল হক ও তার ভাই বলে উঠে আমি তাদের বাপকে মারেছি পানিতে ডুবিয়ে এখন তাহাদেরকে মারবো কুপিয়ে কুপিয়ে।
এর পর থেকে এলাকায় আলোচনায় চলে আসে রেজান হত্যা রহস্য। গত ০৭-১০-২০১৭ ইংরেজী বিভিন্ন অনলাইনে নিউজ পোর্টালে ও প্রিন্ট পত্রিকায় জগন্নাথপুরে ১০ বছর পর রেজান হত্যার রহস্য উদঘাটন হওয়ার পথে সংবাদ ছাপা হলে এলাকায় সমালোচনা ঝড় উঠে।
গত ১৩/০২/২০১৮ ইংরেজী নিহত রেজান উদ্দিনের ছেলে তোফায়েল আহমদ তার বাবার হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে সুনামগঞ্জ কোর্টে মামলা করেন যার নং সি,আর (জগন্নাথপুর) ১৪০/২০১৭ মামলা দায়ের করে। মামলা দায়েরের পর থেকে আসামী নুরুল হক ও তার ভাই পলাতক ছিল।
গত শনিবার রাত্রে জালালাবাদ থানা পুলিশ রাকিব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ এর এলাকা থেকে আসামী নুরুল হককে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করে জগন্নাথপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. হারুনুর রশিদ চৌধুরী বলেন, আসামী নুরুল হক কে গ্রেফতার করা হয়েছে। সুষ্ট তদন্ত সাপেক্ষে মানুষ যাতে সুবিচার পায়। এব্যাপারে আমি কাজ করবো।
Leave a Reply