চান মিয়া, ছাতক (সুনামগঞ্জ)::ছাতকে হাওর রক্ষা বাঁধের টাকা এখনো না- পাওয়ায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ পিআইসি কমিটির সদস্যরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে অবস্থান ধর্মঘট পালন করেছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার ১৭মে’ দুপুরে প্রায় দু’ঘন্টাব্যাপি এ অবস্থান ধর্মঘট পালন করেন সিংচাপইড় ইউপি চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিন মোহাম্মদ সাহেলসহ পিআইসি কমিটির সদস্যরা। সিংচাপইড় ইউনিয়নের চাউলী হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ কাজের সাকুল্য টাকা না পাওয়ায় তারা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে এ অবস্থান ধর্মঘট পালন করা হয়। এ সময় অবস্থান ধর্মঘটের বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে লাইভ ষ্ট্যাটাস ছেড়ে দিলে এ নিয়ে উপজেলা জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। আলোচনায় উঠে আসে কথিত পিআইসি কমিটির নামে বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা আত্বসাত ও হরিলুটের বিষয়টি। এ ঘটনার খবর পেয়ে ছাতক পৌরসভার মেয়র আবুল কালাম চৌধুরী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে পরিবেশ অনেকটাই শিথিল হয়ে আসে। এ সময় জেলা পরিদের সদস্য আজমল হোসেন সজল, ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম, আখলাকুর রহমানসহ স্থানীয় সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। পরে আলোচনার মাধ্যমে টাকা প্রাপ্তির বিষয়টির সাময়িক সমাধান করা হয়। সিংচাপইড় ইউপির চাউলীর হাওরে ৪টি পিআইসির মাধ্যমে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ কাজের কার্যাদেশ প্রদান করে পাউবো। কিন্তু বাঁধের নির্ধারিত পরিমাপ ছাড়াও এখানে সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে পূর্নাঙ্গ বাঁধ নির্মাণের ক্ষেত্রে আরো ৩৪০মিটার অতিরিক্ত বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে বলে পিআইসি কমিটি দাবি করেছেন। হাওরের ফসল কাটা শেষ হলেও উপজেলা থেকে অতিরিক্ত ৩৪০মিটার বাঁধ নির্মাণের টাকা অজ্ঞাত কারনে ছাড় দেয়া হচ্ছে না। ফলে অতিরিক্ত ৩৪০মিটার বাঁধ নির্মাণের টাকার জন্য পিআইসি কমিটি বার-বার ধর্না দিয়ে যাচ্ছে সংশিষ্টদের কাছে। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশিষ্ট কর্মকর্তা দায়সারাভাবে প্রকল্পের অতিরিক্ত বরাদ্ধ ঝুলন্ত অবস্থায় রেখে নিজেদের গা- বাঁচানো চেষ্টা করছেন। অতিরিক্ত বরাদ্ধের টাকা প্রাপ্তিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশিষ্ট কর্মকর্তা একে অন্যকে দায়ি করে যাচ্ছেন। ২০ফেব্রুয়ারী নির্বাহী কর্মকর্তা এক চিঠিতে উল্লেখ করেছেন, চাউলীর হাওরের ৪টি পিআইসির জটিলতা নিরসনে সিলেট বিভাগীয় কমিশনারের নির্দেশক্রমে ১৪ফেব্রুয়ারী সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক, সুনামগঞ্জ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী, সিলেট পাউবোর তত্ত্বাবধায় প্রকৌশলী, এএসপি সার্কেলসহ উপজেলা কমিটির সদস্যবৃন্দ সরজমিনে পরিদর্শন করেছেন। এতে সংশোধিত প্রাক্কলন তৈরী পূর্বক জরুরী ভিত্তিতে বিধি মোতাবেক জেলা কমিটিতে অনুমোদনের জন্য পাউবোর উপ-সহকারী প্রকৌশলী সাহাদাত হোসেনকে নিদের্শনা প্রদান করেন। কিন্তু বর্নিত প্রাক্কলন সমূহ তৈরী পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনে সাহাদাত হোসেন ব্যর্থ হন। এতে চাউলীর হাওরের জন্য গঠিত ৪পিআইসির সহিত চুক্তিপত্র সম্পাদন, কার্যাদেশ প্রদানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনে উপ-সহকারী প্রকৌশলীর গাফিলতির কথা উলেখ করেছেন চিঠিতে। এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিন সাহেল জানান, জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা থাকা সত্বেও চাউলীর হাওরের অতিরিক্ত বরাদ্ধ নিয়ে ইউএনও টালবাহানা করছেন। ইউএনও মহোদয় এ বিষয়ে একেক সময় একেক কথা বলে সময় ক্ষেপন করে যাচ্ছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নাছির উলাহ খান জানান, ল্যান্ড সার্ভে রিপোর্টে অতিরিক্ত বাজেটের বিষয় উলেখ করা হয়নি। একটি বেসরকারী সংস্থা তাকে না জানিয়েই চাউলীর হাওর প্রকল্প সার্ভে করেছে। অতিরিক্ত কাজের বরাদ্ধের জন্য ইউএনও মাধ্যমে একটি আবেদন করলে আবেদনে তিনি সুপারিশ করবেন। জেলা কমিটির সভায় আবেদন মঞ্জুর হলে প্রয়োজনীয় অর্থ ছাড় দেয়া হবে।
Leave a Reply