1. admingusar@gmail.com : admingusar :
  2. crander@stand.com : :
  3. bnp786@gmail.com : editor :
  4. sylwebbd@gmail.com : mit :
  5. zia394@yahoo.com : Nurul Alam : Nurul Alam
  6. mrafiquealien@gmail.com : Rafique Ali : Rafique Ali
  7. sharuarprees@gmail.com : Sharuar : Mdg Sharuar
  8. cardgallary17@gmail.com : Shohidul Islam : Shohidul Islam
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৩৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :

সৌদিতে পাশবিক নিপীড়ন, ফিরে স্বামীর ঘরে ঠাঁই নাই

  • আপডেটের সময় : রবিবার, ১০ জুন, ২০১৮

নতুন আলো নিউজ ডেস্ক : সৌদি আরবে যাওয়ার পাঁচ মাস পরই ২৪ মে মুন্সিগঞ্জের শারমিন (আসল নাম নয়) দেশে ফিরে আসেন। জীবিকার সন্ধানে বিদেশে গিয়ে শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তিনি। কোনোমতে প্রাণ নিয়ে দেশে ফিরতে পারলেও এখানেই তার দুর্দশার সমাপ্তি হয়নি।

৩৫ বছর বয়সী শারমিনের সঙ্গে গত ৬ জুন এই প্রতিবেদকের কথা হয়। তিনি বলেন, ‘স্বামী ঘরে তুলতে চাইছে না। টাকা না পাঠিয়ে দেশে ফিরে আসায় সে আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে রয়েছে।’ স্বামী পরিত্যক্তা হয়ে এখন বোনের সঙ্গে বসবাস করছেন তিনি।

লোমহর্ষক নির্যাতনের বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি জানান, রিয়াদে একজনের বাড়িতে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন। সেখানে তাকে শারীরিক ও যৌন নিপীড়নের শিকার হতে হয়। নির্যাতন সইতে না পেরে স্থানীয় রিক্রুটিং এজেন্টকে খবর দিলে তাকে জেদ্দায় আরেকজনের বাড়িতে পাঠানো হয়। একই কায়দায় সেখানেও নির্যাতিত হন। পরে বাধ্য হয়ে এপ্রিলের মাঝামাঝির দিকে ওই বাড়ি থেকে পালিয়ে যান।

শারীরিক আঘাত দেখে পুলিশ তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল থেকে একটি আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। আশ্রয়কেন্দ্রটিতে এক মাসের বেশি থাকেন শারমিন। সেখানে তার যৌনাঙ্গে সংক্রমণের চিকিৎসা করানো হয়।

কাজের সন্ধানে মধ্যপ্রাচ্যে যাওয়া বেশিরভাগ বাংলাদেশি নারীরই গল্প প্রায় একই রকম। ভাগ্য বদলের স্বপ্ন নিয়ে অজানা দেশের উদ্দেশে পাড়ি দিয়ে শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতনের শিকার হয়ে খালি হাতে দেশে ফিরে আসতে হচ্ছে এরকম আরও শত শত নারীকে।

সৌদি ফেরত নারী কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অনেককেই তাদের চাকরিদাতারা বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিলেন। পরে পুলিশ তাদের আটক করে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছে। মারাত্মক নিপীড়নের মুখে অনেকেই আবার নিজেরাই পালিয়ে গিয়ে জেদ্দা ও রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাস পরিচালিত আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে যান। মাসের পর মাস নির্যাতন সহ্য করে পরে যারা দেশে ফিরে আসছেন তারাও সরকারি কর্তৃপক্ষের কোনো ধরনের সহায়তা পাচ্ছেন না। এদের অনেকেই কথিত কলঙ্কের কারণে পরিবারে জায়গা পাচ্ছেন না।

বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের তথ্য অনুযায়ী বিদেশে নির্যাতনের শিকার প্রায় চার হাজার নারী গত বছর দেশে ফিরে এসেছেন। চলতি বছরের ছয় মাসে এরকম আরও বহু বাংলাদেশি নারী ফিরে এসেছেন।

রিয়াদে সাত মাস একটি বাড়িতে কাজের পর গত মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময়ে শূন্য হাতে দেশে ফিরে আসেন চুয়াডাঙ্গার দুলশান (৩৭)। প্রতিদিন তাকে দিয়ে ১৮-২০ ঘণ্টা কাজ করানো হয়। সেই সঙ্গে ছিল শারীরিক নির্যাতন। সব মিলিয়ে সহ্যের বাইরে চলে যাওয়ায় তিনি দেশে পালিয়ে আসেন।

রিয়াদে যাওয়ার আগে জর্ডান ও দুবাইয়ে কাজ করেছিলেন তিনি। সেখানকার আয় দিয়ে তিন শতাংশ পরিমাণ জমিও কিনেছিলেন। তার স্বপ্ন ছিল সৌদি আরবে কাজ করে ওই জমির ওপর নিজের একটি বাড়ি তৈরি করবেন।

দুলশান জানান, দেশে ফিরে চিকিৎসা করানোর মতো টাকাও ছিল না। বড় মেয়ের টাকায় চিকিৎসা শেষে এখন তার সঙ্গেই থাকছেন। শুধুমাত্র টাকার অভাবে ১০ বছরের ছোট মেয়ের পড়ালেখা চালানো সম্ভব হচ্ছে না।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের হিসাব মতে প্রায় ছয় লাখ বাংলাদেশি নারী মধ্যপ্রাচ্যে কাজের জন্য গেছেন। এর সিংহভাগ গৃহকর্মী হিসেবে গেছেন সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, লেবানন ও জর্ডানে। তবে নির্যাতনের শিকার হয়ে কত নারী দেশে ফিরতে বাধ্য হচ্ছেন তার কোনো হিসাব নেই মন্ত্রণালয়ের কাছে। জনশক্তি ব্যবসা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গৃহকর্মী হিসেবে নারীদের বিদেশে যাওয়া যত বাড়ছে তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নির্যাতনের মুখে দেশে ফিরে আসা নারী কর্মীর সংখ্যাও বাড়ছে।

ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের হিসাব বলছে, প্রতি মাসে ৩০০-৪০০ জন নারী কর্মী মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে ফিরে আসতে বাধ্য হচ্ছেন। এদের বেশিরভাগই আসছেন সৌদি আরব থেকে। বিদেশে তারা শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।

প্রতিষ্ঠানটির মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের প্রধান শরীফুল হাসান বলেন, কাজের জন্য নারীদের বাইরে বেরোনোটা ইতিবাচক। কিন্তু যখন শারীরিক, যৌন ও অর্থনৈতিক নিপীড়নের শিকার হয়ে তারা খালি হাতে দেশে ফিরে আসছে তখন কর্তৃপক্ষের উচিৎ তাদের রক্ষায় জোরালো ভূমিকা রাখা। এসব ক্ষেত্রে আরেকটি আশঙ্কাজনক প্রবণতা হলো, দেশে ফিরে আসা নারী কর্মীরা বাড়িতে জায়গা পাচ্ছেন না।

তিনি আরও বলেন, প্রবাসীরা যখন দেশে টাকা পাঠায় তখন তাদের সরকারিভাবে বাহাবা দেওয়া হয়। কিন্তু দেশে ফিরে আসাদের আশ্রয় দেওয়ার মতোও কেউ থাকে না। এটা ট্রাজেডি।

অভিবাসন নিয়ে গবেষণা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন একটি সংস্থা ‘মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিট’ (রামরু)-এর সভাপতি অধ্যাপক তাসনিম সিদ্দিকী বলেন, গৃহকর্মী হিসেবে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া ৫০ শতাংশের বেশি নারী হয় বিধবা নয় স্বামী পরিত্যক্তা। দেশে আর্থিক দুর্দশা তাদের বিদেশে যাওয়ার অন্যতম কারণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরণের আরো খবর

বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস

সর্বমোট

আক্রান্ত
সুস্থ
মৃত্যু
সূত্র: আইইডিসিআর

সর্বশেষ

আক্রান্ত
সুস্থ
মৃত্যু
স্পন্সর: একতা হোস্ট
© All rights reserved © 2021 notunalonews24.com
Design and developed By Syl Service BD