মুহিবুর রেজা তালুকদার টুনু:: সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার পাইলগাঁও, আশারকান্দীও রানীগঞ্জ ইউনিয়ন সহ পৌরএলাকার একাংশে প্রায় ৪৫/৫০ টি গ্রাম বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে।বন্যার পানি হাট-বাজার, রাস্তা-ঘাটসহ ঘরবাড়িতে উঠে পড়েছে। ইতিমধ্যে ২০/২৫ পরিবারের লোকজন বসত বাড়ি ছেড়ে স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। এছাড়া পাইলগাও ইউনিয়নের হাড়গ্রাম ও অনঙ্গমহল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ৩২টি বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার ২১শে জুন পর্যন্ত এই সব এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি অপরির্বতি রয়েছে।
এলাকাবাসী জানান, গত কয়েকদিনের ভারি বর্ষণ উজান থেকে ধেয়ে আসা পানি আর পাহাড়ী ঢলে উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়ায় কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার আশারকান্দী ইউনিয়নের উত্তর কালনিচর, শুকলাম্বরপুর, মিলিক, দাওরাই, কাকবলী, পাঠকুরা, জয়দা, শেওরা, মিঠাভরাং, ঐয়ারকোণা, ফেচি,বড় ফেচি বাজার, নোয়াগাঁও,বুরাইয়া, সম্ভপুর,তাজপুর, শ্রীকৃষ্ণপুর, হবিপুর, জামালপুর, রুপসপুর, সুরতনপুর, ফেচিশেওরা, পাইলগাঁই ইউনিয়নের নতুন কসবা, জালালপুর, পূর্ব কাতিয়া, কাতিয়া, রানীগঞ্জ ইউনিয়নের রানীগঞ্জ বাজার ও পৌরএলাকার একাংশসহ প্রায় ৪০টি গ্রামের মানুষ পানি বন্ধ হয়ে পড়েছেন। এছাড়া সৈয়দপুর-শাহারপাড়া ইউনিয়নের ভবেরবাজার-নয়াবন্দর-গোয়ালাবাজারের সড়ক ও জগন্নাথপুর-শিবগঞ্জ-বেগমপুর সড়ক পানিতে ডুবে যাওযায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এবং জগন্নাথপুর পৌরএলাকার ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় রাস্তা-ঘাটসহ বাসা-বাড়ির আঙ্গিনায় পানি উঠেছে।
আশারকান্দি ইউনিয়নের কালনীর চর গ্রাম নিবাসী সুয়েবুর বলেন, আমাদের ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়ে পড়েছে। গ্রামের রাস্তা-ঘাটসহ বাড়ি-ঘরে পানি প্রবেশ করেছে। এরই মধ্যে পানির কারনে বসত বাড়ি বসবাস করার অনুপযোগি হয়ে পড়ায় ২০/২৫ টি পরিবার তাদের আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি বলেন, বন্যায় কবলিত এলাকার মানুষজন চরম দূর্ভোগে পড়েছেন।
আশারকান্দী ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বকুল চন্দ দেব বলেন, ২০/২৫টি গ্রামের লোকজন পানি বন্ধ হয়ে পড়েছেন। রাস্তা-ঘাট সহ বিভিন্ন হাট-বাজার বন্যা কবলিত হওয়ার ফলে নানা রকম ভোগান্তিতে পড়েছেন এলাকাবাসী। তিনি বলেন, পাহাড়ী ঢল ও টানা বৃষ্টিপাতের কুশিয়ার নদীর পানি বেড়ে যাওয়ার নদীর তীরবর্তী বন্যা কবলিত হয়ে পড়ে। তবে আজ বৃহস্পতিবার পানি বাড়েনি বলে তিনি জানিয়েছেন।
রানীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল হক রানা বলেন, রানীগঞ্জের প্রধান হাট-বাজারসহ কয়েকটি গ্রামের মানুষপানি বন্ধি হয়ে পড়েছে। বন্যায় পরিস্থিতি বর্তমান অপরির্বতি রয়েছে।
পাইলগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান শাহান আহমদ জগন্নাথপুর ট বলেন, ৪/৫দিন ধরেই ইউয়িনের ৫/৬টি গ্রামের মানুষ বন্যা কবলিত হয়ে পড়ায় দূর্ভোগ বেড়েছে। ফেচিবাজারের পানি এখনও কমেনি।
জগন্নাথপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র শফিকুল হক শফিক বলেন, নলজুর নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদী তীরবর্তী এলাকা বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে।
জগন্নাথপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন বলেন, বন্যার পানি উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শ্রেণীকক্ষ ও বিদ্যালয়ের আঙ্গিনায় প্রবেশ করায় ৩২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় সামরিকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
ইতিমধ্যে দুইটি বন্যায় আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
Leave a Reply