নতুন আলো অনলাইন ডেস্ক:দেশপ্রেমিক সরকার গঠনের লক্ষ্যেই ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট’ গঠন করা হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান ও কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, ‘ভোটারবিহীন, অবৈধ ও স্বেচ্চাচারি সরকারের ‘মাথা খারাপ’ হয়ে গেছে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যে কতটা কার্যকর সরকারের ভাষাভঙ্গি বক্তব্য দেখলেই আপনারা তা বুঝতে পারবেন। শিগগিরই তাদের (সরকার) মাথা আরও খারাপ হবে।’
সোমবার (২২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর শিশু কল্যাণ মিলনায়তনে ইন্টারন্যাশনাল ডায়ালগ এইড ফাউন্ডেশন (ইডাফ) আয়োজিত “নির্বাচন ও মানবাধিকার” শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ক্ষমতাসীন সরকারের উদ্দেশ্যে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘আপনারা টের পাবেন- আগামী দু-এক সপ্তাহের মধ্যে কোথাকার পানি কোথায় গড়ায়, কত ধানে কত চাল হয়। এখনও বুঝতে পারেন নাই। কারণ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন সমাজ এবং রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক নেতা হিসেবে তাদের অতীত একটি পরিচয় আছে।’
দেশে মানবাধিকার বলে কিছু নেই দাবি করে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘যেখানে গণতন্ত্রের স্বাধীনতা থাকে না, বাকস্বাধীনতা থাকে না, ব্যক্তি তার অধিকার হারায় সেখানে মানবাধিকার বলে তো কিছু থাকে না। বাংলাদেশে মানবাধিকার আজ ভূলুণ্ঠিত।’
বর্তমান সরকারের স্বরূপ তুলে ধরে দুদু বলেন, ‘দেশ এবং বিশ্ববাসী জানে স্বাধীন একটি দেশে এখন ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। এই ফ্যাসিবাদ এতটাই ভয়ঙ্কর যা কিছু সৃজনশীল যা কিছু ভালো সেগুলো সব তছনছ করে ফেলেছে। আমাদের অতীতের যে গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সেগুলো সব ধ্বংস করে দিয়েছে ফ্যাসিস্ট সরকার।’
তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মানুষের মধ্যে আশাবাদ সৃষ্টি করায় এখন সমাবেশের অনুমতি দিতেও গড়িমসি করছে সরকার। আমাদের নেতৃবৃন্দকে গ্রেফতার-গুম করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত।’
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন প্রসঙ্গে দুদু বলেন, ‘বাংলাদেশের অন্যতম গণতন্ত্রপ্রিয় ব্যক্তিত্ব প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন মরহুম শেখ মুজিবুর রহমানের পার্লামেন্টে বাকশাল গঠনের প্রতিবাদ করেছিলেন। শত শত রাজনীতিবিদের মধ্যে তিনিই একমাত্র ব্যক্তি যিনি শেখ মুজিবের জীবদ্দশায় বাকশালের বিরোধিতা করে পার্লামেন্ট থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। গণতন্ত্রের পক্ষে ভূমিকা নিয়েছিলেন। ঠুনকো অভিযোগে দেশের প্রথিতযশা কিছু ব্যক্তি তার সঙ্গে যে আচরণ করছেন তা নিন্দনীয়।’
এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আমি আজ অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে দেখি আর ভাবি- দেশের শেয়ারবাজারের লুণ্টনকারী হিসেবে যারা চিহ্নিত, বাংলাদেশের সেন্টাল ব্যাংক যখন লুটপাটসহ অধিকাংশ ব্যাংক ফাঁকা করে ফেলা হয়েছে তখন এসব ব্যক্তিরা কি সরকারের বিরুদ্ধে উকিল নোটিশ পাঠিয়েছিলেন? মামলা করেছিলেন?’
নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সাবেক এই ছাত্রনেতা বলেন, ‘আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ হই। নিজেদের প্রয়োজনে দেশের প্রয়োজনে স্বাধীনতার মর্যাদা অক্ষুণ্ন রাখার প্রয়োজনে ও গণতন্ত্রের স্বার্থে আসুন আমরা আবারও ’৭১ এর চেতনায় জেগে উঠি।’
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি মো: মোজাহারুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন- নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ইসমাইল হোসেন বেঙ্গল, মুক্তিযোদ্ধা দলের সহ-সভাপতি ছানোয়ার হোসেন, জিনাফের সভাপতি লায়ন মিয়া মো:আনোয়ার, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন ও যুবদল নেতা কাদের সিদ্দিকী প্রমুখ।
সূত্র: ব্রেকিংনিউজ
Leave a Reply