প্রিয় দেশবাসী আচ্ছালামু আলাইকুম, গত আট জানুয়ারী ২০২০ স্বপরিবারে বাংলাদেশ থেকে লন্ডন আসার সময় বিজি ০০১ ফ্লাইটে যে সমস্ত যাত্রীগন ছিলেন তাঁরা একটা বিমান পরিবারের পক্ষ থেকে একটা খুবই বাজে অভিজ্ঞতা নিয়ে আসেন । আট জানুয়ারী সকাল দশটা পনের মিনিটে ঢাকা-লন্ডন ফ্লাইটের জন্য সাত জানুয়ারী সিলেট থেকে ঢাকা নিয়ে এসে অত্যন্ত নিম্নমানের হোটেলে রাত্রি যাপনের ব্যাবস্থা করা হয় । ভোর সাড়ে পাঁচটায় হোটেল থেকে বিমান বন্দরে আসার জন্য ডাকা হয়, পৌনে সাতটার সময় বিমানবন্দরে পৌছি, পৌছেই সিডিউল স্কৃনে দেখলাম লন্ডন ফ্লাইট এক ঘন্টা পাঁচ মিনিট দেরী, ন’টার দিকে সিকিউরিটি তল্লাশি করে রাখা হয় বন্দী শিবিরের মত শেষ একটা ঘরে যেখানে আসার আগেই সাথে থাকা পানি পর্যন্ত রেখে দেয়া হয় ।
কোন ধরনের ঘোষণা ছাড়া সবাইকে এখানে রাখা হয়েছে, বলে রাখা দরকার লন্ডনে স্কুল হলিডে থাকায় প্রায় সবাই ছিলেন স্বপরিবারে, বেশির ভাগই স্কুল চিলড্রেন, ফ্লাইট ছাড়ার কথা এগারোটা বিশ হলেও এখন এগারোটা বিশ বাজে কিন্তু আমরা জানিনা ফ্লাইট কখন ছাড়বে । ইতিমধ্যে পিপাশা আর পেটের ক্ষিধায় বাচ্চারা কান্না কাটি করছে, এখানে কর্তব্যরত বিমানের লোকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তারা বললেন বেশী সমস্যা হলে বোর্ডিং পাস তাদের কাছে রেখে বাইরে থেকে খেয়ে আসার পরামর্শ দেন । কোন উপায় না দেখে তাই করলাম, ইতিমধ্যে সরকার দলীয় দুই তিনজন ছাড়া সব প্যাসেঞ্জার বিমানের লোকদের কাছে সিডিউল জানতে চান কিন্তু কতৃপক্ষ কোন সিডিউল জানাতে পারেন নি, অনেক বাক বিতন্ডার পর জানালেন আমাদের বিমানটি এখন কলকাতা আছে আর এটা একেবারে নতুন বিমান ওখান থেকে আসলেই নতুন সেট আপ করে আমাদের নিয়ে ছেড়ে যাবে তবে কতক্ষণ সময় লাগবে তা বলতে পারব না এখন ।
অনেক সংগ্রামের পর একটার দিকে অত্যন্ত নিম্নমানের সামান্য ব্রেড আর কেক আংশিক পরিবেশন করা হয় । যাত্রীদের সাথে মারাত্মক দুর্ব্যবহার করে বিমান কতৃপক্ষ ।
আমরা বলেছি, আমরা আপনাদের কাছে বন্দী, তা না হলে যাত্রীদের সাথে আপনারা এমন ব্যাবহার করতে পারতেন না, স্পষ্ট করে বলেছি আপনাদের এই অন্যায়ের প্রতিবাদ এখানে করলে হয়ত গুম করে ফেলবেন এই ভয়ে সবাই ।
ইতিমধ্যে আমি আমার সাথে থাকা একটা ইনভেলাপের উপর কয়েকটি পরিবার পরিবার প্রধানের নাম ও ফোন নাম্বার যোগাড় করি, আমার এই তৎপরতা একজন লোক বিমানের লোকদের নজরে আনেন ( পরে জানলাম তিনি সরকার দলীয় মানুষ) আমাকে তারা ফলো করছেন দেখে আমি আমার কাগজ টা ব্যাগে রেখে দেই।
অনেক সংগ্রামের পর সকাল দশটা পনের মিনিটের ফ্লাইট বিকেল আড়াইটায় লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করে ।
বিমান কর্তৃপক্ষের এহেন অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হওয়া আমাদের দায়িত্ব বলে মনে করি। ইতিমধ্যে লন্ডনে বাংলাদেশী কমিউনিটি নেতৃবৃন্দের সাথে যোগাযোগ হয়েছে । আজ যারা আমাদের সাথে এমন দুর্ব্যবহার করেছেন কাল আপনি ও তার স্বীকার হবেন, তাই আসুন আমরা সবাই মিলে এর প্রতিবাদ জানাই ।
লেখক: মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান