হৃদয়ের দেয়াল জুড়ে কত স্মৃতি ঘাপটি মেরে বসে কাঁদে,
দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে বেড়ায় না সময়ের ঘড়ি, দ্রুত পায়ে হেঁটে চলে টিকটিক ছন্দ তালে ,
একসময় নদীগুলো ছিলো বর্ণাঢ়্য যৌবনা,মনোরম আর দৃষ্টিনন্দন।
বিধাতার নিখুঁত গাঁথুনি আর সাজসজ্জায় ভরপুর,নৌকার মাঝির আহ্ কি অপরূপ গানের টান?ভেঁপু আর লঞ্চের মন বেতালা শব্দ সব যেন কালে গহ্বরে হারিয়েছে জৌলুশ, দুমড়ে মুচড়ে অস্তিত্ব বিলীন।
গ্রামগুলো এত প্রাণচঞ্চল পদচারণে মুখর হয়েছিলো চোখে পড়ার মতো,
প্রাণভরে নিঃশ্বাস নেওয়া যেতো,নিরিবিলি সবুভাজে অঢ়েল দোলা,উড়ে বেড়ানো হাজার রকম পাখির কলকাকলির মিষ্টি ঝংকারে হারিয়ে যেত মন।
পুরোনো গাছের কুঠুরিতে শিয়ালের লুকচুরি ,ফাঁকফোকর পেলেই বেরিয়ে পড়তো মুরগী চুরির ধান্দায়।
চাঙ্গা হয়ে উঠতো খেলার মাঠ,নতুনভাবে ঢেলে সাজানো গোছানো টানটান উত্তেজনায় আগ্রহী দর্শকের ভীড়।
মানুষ মানুষকে হৃদয়ের গভীরে স্থান দিতো,হেসেই উড়িয়ে দিতো দুঃখ কষ্টগুলো।
ঘোলাটে নয় একত্রে কাজ করতে আগ্রহী হতেন তারা।
মুড়ি মাখানো হতো ঝাঁঝালো সরিষার তেল দিয়ে,এখনও চোখেমুখে লেগে সেই মুখরোচক স্বাদ।
কিলবিলিয়ানো চেলামাছ জাল দিয়ে ধরার পালা চলতো লোকসমাগমে।
দেইরি বেড়ার উপর দিয়ে লতানো সিঁদুর লালে মাকাল ফল,
তার কি সুন্দর সাদাসাদা ফুলের উপভোগ্য বৈচিত্র্যময় দৃশ্য!
নয়ন জুড়িয়ে যেতো সৃষ্টিকর্তার অনন্য সৌন্দর্যপূর্ণ সৃষ্টিতে ঘিরে উঠা ঐতিহ্য অবলোকন করে।
এখন শুধু আক্ষেপ ছাড়া কিছু নেই,মানুষ গুলো যান্ত্রিক হয়ে গেছে,মানুষের চাপে সব উপড়ে পড়ছে, নিশ্চিহ্ন হচ্ছে চিহ্নগুলো।
প্রকৃতি এখন অসহায় আর বিষন্নতায় ঘেরা,ভোগান্তি আর হেনস্তায় কাঁদে।
কবি পরিচিতি : শামছুন্নাহার রুবাইয়া, প্রভাষক রাষ্ট্র বিজ্ঞান, পাঁচ পোটল ডিগ্রি কলেজ, ধনবাড়ি টাংগাইলে।