মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে ছাত্রলীগের ক্যাডাররা পাঁচভাই রেস্টুরেন্টে খাবার খেতে আসা ওই তিন প্রবাসীর ওপর হামলা চালায়। এসময় তাদেরকে বেধড়ক পেটানো হয় এবং তাদের ব্যবহৃত একটি প্রাইভেট কারও ভাঙচুর করা হয়। হামলাকারীরা সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ সভাপতি পিযুষকান্তির অনুসারী ছাত্রলীগ ক্যাডার বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় লোকজন।
খবর পেয়ে কোতোয়ালীিথানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি )সেলিম মিঞার নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি শান্ত করে এবং আহত ৩ যুবকদের উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
আহতরা হলেন নগরীর বালুচর এলাকার সফিক উদ্দিনের ছেলে হাসান (২৪), একই এলাকার বশির উদ্দিনের ছেলে ইমন (১৮) ও গয়াস মিয়ার ছেলে নাহিয়ান (১৮)। এরা তিনজনই যুক্তরাজ্য প্রবাসী। এছাড়া তাদের গাড়ি চালকও আহত হন। আহতদের ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ইংল্যান্ড প্রবাসী ৩ যুবক পাঁচভাই রেস্টুরেন্টে রাতের খাবার খেয়ে বেরিয়ে আসলে তাদের কথাবার্তা নিয়ে খারাপ মন্তব্য করে ওখানে উপস্থিত সিলেট জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ সভাপতি পিযুষ কান্তি দে’র গ্রুপের কর্মী জায়েদ ও সজিব নামের দুই ছাত্রলীগ নেতা। এ নিয়ে এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হলে জায়েদ ও সজিবের নেতৃত্বে ১০/১৫ জন ছাত্রলীগ কর্মী তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে ওই তিন যুবক গুরুতর আহত হয়।
হামলাকারীরা ছাত্রলীগের নেতাকর্মী এবং মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি পিযুষ কান্তি দে’র অনুসারী বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে পিযুষ কান্তি দে’র দাবি, প্রবাসীরাই মাতাল অবস্থায় তাঁর কর্মীদের মারধর করেন।

সিলেট কতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম মিয়া বলেন, মঙ্গলবার রাতে পাঁচ ভাই রেস্টুরেন্টে খেতে আসেন তিন প্রবাসী। এসময় তাদের একজনকে নিয়ে পাঁচ ভাই রেস্টুরেন্টের গেটে দাঁড়ানো কয়েকজন তরুণ ব্যঙ্গ করেন। এতে ওই প্রবাসী বাঁধা দিলে তরুণরা দলবল নিয়ে এসে তাদের উপর হামলা চালায়। হামলারকারীরা পিযুষ কান্তি দে’র অনুসারি বলে জানান ওসি।
এ ব্যাপারে সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি পিযুষ কান্তি দে বলেন, আমার জুনিয়র দুইটা ছেলে রাতে পাঁচ ভাই রেস্টুরেন্টে খেতে গিয়েছিলো। এসময় তিনজন যুবক মদ খেয়ে ওই রেস্টুরেন্টে এসে তাদের মারধর করে। আমাদের কয়েকজন কর্মীর উপর তারা গাড়িও তোলে দেয়। এনিয়ে দুইপক্ষের কিছুটা ঝামেলা হয়েছে। মারধরে রাশেদ ও আসাদ নামে দুই ছঅত্রলীগ নেতা আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন বলে জানান পিযুষ।
এদিকে, ছাত্রলীগ ক্যাডারদের হামলায় আহত তিন লন্ডন প্রবাসী যুবক ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরেছেন। বুধবার সকালে তারা হাসপাতাল ত্যাগ করেন।
এ ঘটনায় এখনো কোন মামলা হয়নি বলে জানিয়েছেন সিলেট কোতোয়ালী থানার ওসি সেলিম মিয়া। তবে ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে পলাশ নামের এক যুবককে মঙ্গলবার রাতেই আটক করেছে পুলিশ। অভিযোগ পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।