বিয়াই আপ্যায়ন
(কবিতাটি আঞ্চলিক ভাষায় লেখা)
আমিনা খাতুন দীপা
পদ্মা পাড়ের মেয়াগো আমি,মেঘনা পাড়ের বউ,
হাশুড়ী কয়, জ্যাতা ইলশা আনে যেনো তোমার বাবারে কও।
বাবায় আনলো জ্যাতা ইলশা হাশুড়ী আনন্দে কুটি কুটি,
তা দেইখ্যা মেঘনা পাড়ে পদ্মার দৃশ্য উঠলো ফুটি।
হাশুড়ী মজা কইরা বানাইলো বড়া হিঁদল হুটকীর,
বিয়ান বেলা বাবায় খাইতে বইয়া, ইলশা ভাজা না দেইখ্যা আমারে দিলো এক ভেটকী।
তা দেইখ্যা জামাই গেলো জালটি নিয়া মেঘনা নদীর পাড়ে,
জাল পাইত্যা বড় এক নাম না জানা মাছ আনলো ধরে।
হাশুড়ী অইলো বেজায় খুশী
অইবো আইজ বিয়াই আপ্যায়নে সেরা,
দুফুর বেলা মাছের কোপ্তা, মাছের ভাজা ও বিরান পদে পদে খাওন দিলো, বিয়াইর চাইরদিক ঘেরা।
খাইলো বিয়াই মজা কইরা,
বিয়াইন এইবার জোড় কইরা দিলো একখান বড়া,
খানছেন বিয়াই মেঘনা পাড়ের ঐতিহ্য অইবোই পদ্মার চাইতে সেরা।
বিয়াই কইলেন, এইবার একটুস পায়েস অইবো-গো বিয়াইন?
অইবোগো অইবো! মাঠরীও আছে বিয়াই কবজি ডুবাইয়া খাইয়েন।
আরো আছে ফুল পিডা, দুধে-আমে সাগর কলা, আছে আমসত্তা,
এতোসব দেইখ্যা বিয়াই আফসোস কইরা কন,, দাঁত নাইগো বিয়াইন! শুদুই খাইতে পারি পাটিসাপটা।
বিহাল বেলা খাইয়েন পিডা মেরা, চিতই, ভাপা পুলি,
আর কয়েন না! আফনের বিয়াইন চিনে খালি পাকন -পুলি।
মিষ্টি পিডা খাইতে খাইতে পরাণডা বড়ই অস্থির,
হুটকীর ঝালে ভালোই খাইলাম, বহেনতো বিয়াইন! অইয়া এইবার স্থির।
বিয়াইন মুচকী হাইস্যা কয়,, মিষ্টি জর্দায় খানগো পান সাথে কাঁচা সুপারী,
পদ্মা পাড়ের বিয়াইগো আফনে সত্যই এক রসিক ব্যাপারী!
কবি পরিচিতি –
আমিনা খাতুন দীপা জন্ম ১০ জুন ১৯৮০, ঢাকা জেলার দোহার থানায় জয়পাড়া গ্রামে। পিতা মোঃ আমজাদ হোসেন ও মাতা নূরজাহান বেগম। বিজ্ঞান বিভাগে স্নাতকোত্তর ঢাকা ইডেন মহিলা কলেজ।
লেখালেখি মূলত এফবিতে এসে, স্বামী মোঃ আশরাফুজ্জামান বাবুল সাহেবের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পেয়ে। এফবির বিভিন্ন গ্রুপে প্রতিযোগীতায় বিজয়ী হয়ে লেখাটা এখন নেশা হয়ে গেছে। ৩০০০ শব্দের একটি গল্প লিখে ২০১৯ সালে আমি প্রথম বিজয়ী হয়ে পুরস্কার হিসেবে দুটি উমরা হজ্জের টিকিট লাভ করি।
২০১৯ এর অমর একুশে বই মেলায় যৌথ গ্রন্থে আমার একটি গল্প ও পাঁচটি কবিতা বের হয়। এবারও ইচ্ছে আছে আমার লেখা গল্পগুলো নিয়ে একটি বই বের করবো ইনশাল্লাহ। নবীন লেখক হিসেবে সকলের দোয়া কামনা করি।