বুধবার নরথাম্পটন ক্রাউন কোর্টের শুনানিতে বলা হয়, ডায়ানা ডাফটারের ওপর হামলা চালান তাঁরই স্বামী ফিলিপ ডাফটার। ডায়ানার দেহে ১৭টি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। এর মধ্যে একটি আঘাত ছিল মারাত্মক, বুকের ওপর। নরথাম্পটনে দম্পতির বাড়ির রান্না ঘরের মেঝে থেকে ডায়ানার মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিস।
আদালতে জুরিদের সিসিটিভি ফুটেজ দেখানো হয়। এতে দেখা যায়, গত বছরের ৭ অক্টোবর সকালে ঘরে ফিরছেন ডায়ানা ডাফটার। এদিনই সর্বশেষ তাঁকে জীবিত দেখা যায়। রাষ্ট্র পক্ষের কৌসুলি আদালতকে বলেন, এর পর ঘরের ভেতরে ডায়ানাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করেন তাঁর স্বামী ফিলিপ ডাফটার। স্ত্রীকে ছুরিকাঘাত করে নিজেও আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু ছুরি ভেঙ্গে যাওয়ায় আত্মঘাতী হতে পারছিলেন না তিনি। এর পরেই আরেকটি ছুরি কিনতে তিনি গাড়ি চালিয়ে স্থানীয় সুপার মার্কেটে যান। ঘর থেকে বের হওয়ার পথে এক প্রতিবেশীর সাথে হাসিখুশি হয়ে কুশল বিনিময়ও করেন। শপ অ্যাসিস্ট্যান্ট তাঁর বর্ণনায় জানান, ছুরি কিনতে আসা ফিলিপ ডাফটার হাস্যজ্বল ছিলেন, তাঁকে খুব স্বাভাবিক মনে হয়েছিল, বিচলিত মনে হচ্ছিল না। ঘরে ফিরে এসে হুইস্কি পান করে নিজের পেটে ছুরিকাঘাত করেন ফিলিপ ডাফটার। রাষ্ট্র পক্ষের কৌসুলি গরডন আস্পডেন কেসি আদালতকে বলেন, বাইরে থেকে দেখে এই দম্পতিকে খুব সুখি মনে হলেও ভেতরে ভেতরে তাদের বৈবাহিক জীবন ছিল অসুখের। ৩৬ বছর বয়স্ক স্ত্রী ডায়ানা ডাফটার আফ্রিকার দেশ মালাওয়ি থেকে ব্রিটেনে এসেছিলেন। ৩২ বছর বয়স্ক স্বামী ফিলিপ ডাফটারও একই দেশের নাগরিক এবং বিয়ের আগে ব্রিটেনেই তাদের পরিচয় হয়।
আদালতে আরও একটি সিসিটিভি ফুটেজ দেখানো হয়। এতে দেখা যায় ফিলিপ ডাফটার নরথাম্পটন ট্রেইন স্টেশনে প্রবেশ করছেন। টিকিট কিনে তিনি ট্রেনের একটি ফার্স্ট ক্লাস কামরায় বসেন। লন্ডনের ইউস্টন স্টেশনে পৌঁছার পর ফিলিপ ডাফটার আবেগপ্রবণ, উন্মত্ত এবং গভীরভাবে মর্মাহত হয়ে পড়েন। রক্তাক্ত দেহে ইউস্টন স্টেশনে পুলিস কর্মকর্তাকে তিনি বলেন, তিনি তাঁর স্ত্রীকে খুন করেছেন এবং তিনি একজন খারাপ মানুষ। সেখান থেকে ফিলিপ ডাফটারকে হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে তাঁর সার্জারি করা হয়। পরে তিনি হাসপাতালের মানসিক রোগের চিকিৎসকে বলেন, খুনের সময়ে তিনি পাগলের মতো হয়ে গিয়েছিলেন। গাড়ির এমওটি করা নিয়ে তখন তাদের দু’জনের মধ্যে ঝগড়া হচ্ছিল।
নরথাম্পটন ক্রাউন কোর্টে হত্যা মামলার শুনানি অব্যাহত রয়েছে। ফিলিপ ডাফটার তাঁর স্ত্রীকে হত্যার দায় স্বীকার করলেও এই হত্যাকাণ্ড পূর্ব পরিকল্পিত ছিলনা বলে দাবি করেন তিনি।