কমান্ড নিশ্চিত করাও হাইকমান্ডের দায়িত্ব। কারণ, দলের শীর্ষ নেতৃত্বের অনুপস্থিতিতে সবকিছু হচ্ছে। দলের সিনিয়র নেতাদের এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। দলটির নেতারা মনে করেন, চূড়ান্ত আন্দোলন নস্যাতে সরকার নানা কৌশলের আশ্রয় নিতে পারে। অতীতের চেয়ে সাংগঠনিকভাবে দল বেশ শক্তিশালী। নেতাকর্মীদের মনোবল ভাঙতে সক্রিয় নেতাদের টার্গেট করে দেওয়া হতে পারে নতুন মামলা। আবার পুরোনো মামলাগুলোও সচল করা হতে পারে। অনেক নেতাকে টার্গেট করে তাদের মামলা দ্রুত শেষ করে দেওয়া হতে পারে সাজা। তাই মামলা ও সাজা মোকাবিলা করে রাজপথে টিকে থাকাও কঠিন চ্যালেঞ্জ হবে।
জানতে চাইলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী যুগান্তরকে বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতে প্রয়োজন একটি নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার। দেশে এমন একটি সরকার প্রতিষ্ঠাই আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমরা কাজ করছি। এছাড়া দলীয় কিছু চ্যালেঞ্জ তো সব সময় থাকে। সেগুলোকে আমরা ততটা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করি না। দলীয়ভাবেই তা সমাধান করা হয়ে থাকে।
তিনি বলেন, দেশে প্রকৃত গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা হলে অন্য সমস্যাগুলো এমননিতেই সমাধান হয়ে যাবে। প্রতিষ্ঠানগুলো গণতান্ত্রিক ধারায় পরিচালিত হবে। তাই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠাই আমাদের মূল লক্ষ্য।
বিএনপির একাধিক নেতা বলেন, আন্দোলনে সফল হলে কিছু বিষয় সামনে আসবে। এর মধ্যে রয়েছে জোটগতভাবে নির্বাচনে অংশ নেওয়া, মনোনয়ন চূড়ান্ত করা। যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দলগুলোর মাঠপর্যায়ে জনভিত্তি নেই। কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে সবার জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। তাই তাদের বাদ দিয়ে মনোনয়ন চূড়ান্ত করা কঠিন হবে। আবার তাদের মনোনয়ন দেওয়া হলে দলের গুরুত্বপূর্ণ অনেক নেতা বাদ যাবেন। এতে দেখা দেবে ক্ষোভ ও হতাশা। সবাইকে ম্যানেজ করে মনোনয়ন চূড়ান্তে বেশ বেগ পেতে হবে হাইকমান্ডকে। সমমনা দলগুলো একসঙ্গে ভোট করলে জামায়াতকে নিয়ে কী করবে, তাও সামনে আসবে।
জানতে চাইলে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, এ মুহূর্তে এ সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করাই বিএনপির সামনে সবচেয়ে বড় কাজ। কারণ, এ সরকার সাধারণ মানুষের চাওয়া-পাওয়াকে গুরুত্বই দিচ্ছে না। তারা একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর পৃষ্ঠপোষকতা করে ক্ষমতায় টিকে আছে। আগামী দিনেও তারা যে কোনোভাবে ক্ষমতায় যেতে মরিয়া। তারা সহজে দাবি মেনে নেবে, এটা ভাবার কারণ নেই। তাই এদের কাছ থেকে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবি আদায় করাই হচ্ছে বিএনপির মূল লক্ষ্য।
তিনি বলেন, আন্দোলনে থাকা দলগুলো নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করা হবে বলে হাইকমান্ড ঘোষণা দিয়েছে। তবে সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে নির্বাচন করার ব্যাপারে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। যেহেতু আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে এ সরকারের পতন। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন হলে নির্বাচন নিয়ে আমাদের শরিকদের মধ্যে বোঝাপড়ায় সময় লাগবে না। কাজেই এ নিয়ে কোনো সংকটও হবে না।