নতুন আলো নিউজ ডেস্ক :মুশফিকুর রহিমের বীরত্বে অবিস্মরনীয় এক জয় পেল বাংলাদেশ দল। পরাজয়ের বৃত্তে থাকা বাংলাদেশ দলকে দাপুটে এক জয় উপহার দিলেন এ উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে নিজের সেরা ইনিংসে খেলে বাংলাদেশকে জয় এনে দেন ৩০ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান।
ইনিংসের শুরুতে বাংলাদেশকে জয়ের পথ দেখান লিটন কুমারএবং তামিম ইকবাল। শ্রীলংকার ২১৪ রানের জবাবে তারা উদ্বোধনীতে ৫.৫ ওভারে ৭৪ রান গড়ে দলকে জয়ের স্বপ্ন দেখান। তাদের সেই জয়ের স্বপ্ন বাস্ত বায়ন করেন মুশফিক।
মুশফিক-লিটন-তামিমদের কল্যাণে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো ২০০ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জয় পেল বাংলাদেশ। এর আগে সীমিত ওভারে ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ১৬৪ রান তাড়া করে জয় পায় বাংলাদেশ। অতিতের সেই জয়ের রেকর্ড শনিবার ছাপিয়ে গেলেন মুশফিকরা।
সাম্প্রতিক সময়ে ঘরের মাঠে একের পর এক ম্যাচ হেরে সমালোচনার মুখে পড়ে যায়ওয়া দলটি শনিবারবিদেশ অচেনা মাঠেপ্রত্যাশার চেয়েও ভালো খেলে। আর এই অসম্ভব জয় সহজ হয়েছে মুশফিকের কল্যাণে।
নিজের ৬৫তম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেললেন মুশফিক। এদিন ৩৫ বলে ৪ ছক্কা এবং ৫ চারের সাহায্যে অপরাজিত ৭২ রান করেন।শনিবারের আগে টি-টোয়েন্টির ক্ষুদ্র ফর্মেটের তার ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ছিল ৬৬* রান। এদিন নিজেকেও ছাড়িয়ে যান মুশফিক। তার নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার দিনে বাংলাদেশও ছাড়িয়ে যায় অতিতের সব রেকর্ড।
শ্রীলংকার প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে স্বাগতিক দলের সঙ্গে পাল্লা দিয়েই রান তুলেবাংলাদেশ দল। বরং তাদের চেয়ে বেশি। লংকানরা উদ্বোধনীতে যেখানে ৪.৩ ওভারে ৫৪ রান তুলে। সেখানে বাংলাদেশ তুলে ৫.৫ ওভারে তুলে নেয় ৭৪ রান। ইনিংসেরশুরুটা ভালো হওয়ায় জয়ের রাস্তা পরিস্কার হয়ে যায়।
উদ্বোধনীতে ৭৪ রানের সেরা জুটি গড়ে পরের ব্যাটসম্যানদের জন্য কাজটা সহজ করে দেন লিটন-তামিম। ওপেনারদের গড়ে দেয়া সেই ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে লড়াই করে গেছেন মুশফিক, সৌম এবং মাহমুদউল্লাহরা। ১৯ বলে ৫ ছক্কা আর ২ চারে সাহায্যে ৪৩ রান করেন লিটন। দলকে শতরানে পৌঁছে দিয়ে ফেরেন তামিম। তার আগে ২৯ বলে ৪৭ রান করে যান।
তামিমের বিদায়ের পর ব্যাটিংয়ে নামেন মুশফিক। তৃতীয় উইকেটে সৌম্যর সঙ্গে ৫১ রানের জুটি গড়েন তিনি। ২২ বলে ২৪ রান করে সৌম্য ফিরে গেলেও লংকান বোলারদে শাসিয়ে যান মুশফিক। চতুর্থ উইকেটে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে ফের ৪২ রানের জুটি গড়েন।
জয়ের জন্য শেষ দিকে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ১৪ বলে ২২ রান। এমন অবস্থায় বাউন্ডারি মারতে গিয়ে রিয়াদ আউট হলেও উইকেটে অবিচল থাকেন রহিম। শেষ দিকে জয়ের জন্য ৮ বলে লাগে ১৬ রান। এমন অবস্থায় নুয়ান প্রদীপকে মিড উইকেটের উপর দিয়ে ছক্কা মেরে দলের জয়ের পথ সহজ করেন ৩০ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার।
জয়ের জন্য শেষ ৬ বলে প্রয়োজন ৯ রান। থিসেরা পেরেরার করা প্রথম বলে ২ রান নেন মুশফিক। পরের বলটিকে ডিপথার্ড ম্যানের ওপর দিয়ে বাউন্ডারি ছাড়া করলে বাংলাদেশের জয় সময়ের ব্যবধান হয়ে দাঁড়ার। তৃতীয় বলে দুই রান নিয়ে টাই করেন। পরের বলে সিঙ্গেল নিয়ে জয়ের আনন্দে দুই হাত শূন্যের দিকে তুলে জয়ের উল্লাসে ফেটে পড়েন মুশফিক।
শ্রীলংকা: ২০ ওভারে ২১৪/৬ (কুশল পেরেরা ৭৪,মেন্ডি ৫৭, থারাঙ্গা ৩২*, গুনাথিলাকা ২৬; মোস্তাফিজ ৩/৪৮, মাহমুদউল্লাহ ২/১৫)।
বাংলাদেশ: ১৯.৪ ওভারে ২১৫/৫ রান (মুশফিক ৭২*, তামিম ৪৭, লিটন ৪৩, সৌম্য ২৪, মাহমুদউল্লাহ ২০; নুয়ান প্রদীপ ২/৩৭)।
ফল: বাংলাদেশ ৫ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা: মুশফিকুর রহিম (বাংলাদেশ)।
Leave a Reply