সুনামগঞ্জবাসী জানতে চায়
বিভিন্ন মামলায় কারাগারে আটক বন্দীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়সহ বন্দীদের পরিচালনায় নিয়োজিত থাকেন প্রভাবশালী কয়েদি (ম্যাট)। ওয়ার্ডের শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য জেলকোড অনুসারে কয়েদীদের মধ্যে যাদের আচরণ ভাল তাদের এরকম দায়িত্ব দেয়া হয়। কিন্তু সুনামগঞ্জ কারাগারের ক্ষেত্রে বাস্তবতা ভিন্ন। ম্যাটের দায়িত্ব পালনকারীরা ওয়ার্ডের শৃঙ্খলা রক্ষার পরিবর্তে কয়েদীদের নির্যাতন করা ও তাদের নিকট থেকে অবৈধ টাকা আদায়ের জন্যই যেন দায়িত্ব পেয়ে থাকেন। সুনামগঞ্জ কারাগারে রয়েছেন এরকম বেশ কয়েকজন ম্যাট। এই ম্যাটরাই কয়েদীদের কাছ থেকে নানা অজুহাতে টাকা পয়সা আদায় করে। কারাগারে সকল অনিয়ম-দুর্নীতির সাথে জড়িত রয়েছে বা জড়িত ছিল এমন কয়েকজন ম্যাটের নাম জানিয়েছেন একাধিক কারাগার ফেরত লোক। দৈনিক জনতার ডাকের কাছে বেশ কয়েকজন ম্যাটের নাম ও বাড়ির তথ্য জানান তারা।
তবে সুনামগঞ্জ জেলা কারাগারে কোন বন্দীর কাছ থেকে অন্যায়ভাবে অর্থ আদায়, নির্যাতন বা কোনো অপরাধকর্মের কথা অস্বীকার করেছেন জেল সুপার আবুল কালাম আজাদ। তাঁর দাবি, জেল ফেরত লোকজন কয়েদিদের সম্পর্কে যেসব অভিযোগ করছেন তা মিথ্যা। কারণ কারাগারের ভেতরে থাকাকালীন তারা কেউ কোন ধরনের অভিযোগ করেনি।
কারাগার ফেরত সুনামগঞ্জ শহরের পশ্চিম তেঘরিয়ার বাসিন্দা তৈয়বুর রহমান বলেন, ‘প্রতিটি ওয়ার্ডে একজন করে ম্যাট থাকে কারাগারে। তারাই কারাগারের নানা অপরাধের সাথে জড়িত। সুনামগঞ্জ জেলা কারাগারে ৩টি ভবনে ৪টি করে ১২টি ওয়ার্ড চালু রয়েছে। এই ১২ ওয়ার্ডে রয়েছেন ১২ জন ম্যাট, যারা বিভিন্ন মামলার সাজাপ্রাপ্ত কয়েদী। তবে এই ১২ জন ম্যাটেরও উপরওয়ালা আছেন আরেকজন। তিনি দিরাইয়ের নানু মিয়া। নানু মিয়ার একক আধিপত্যে পরিচালিত হয় সুনামগঞ্জ জেলা কারাগার। নানু মিয়াই জেলা কারাগারের সবকিছুর মূল হোতা।
তৈয়বুর রহমান বলেন,‘কোন ম্যাটকে বেশী দিন এক ওয়ার্ডের দায়িত্ব দেয়া হয় না। ম্যাটদের ওয়ার্ড মাঝে মধ্যেই অদল বদল হয়। সাধারণত এক মাস এক ওয়ার্ডে একজন ম্যাট দায়িত্ব পালন করেন। তবে একমাত্র ব্যতিক্রম হলেন নানু মিয়া। তিনি কারাগারের আমদানী ওয়ার্ডের স্থায়ী ম্যাটের দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
শহরের জামতলার বাসিন্দা শ্রমিক নেতা মো. সামারুল ইসলাম সাম বলেন- ‘সুনামগঞ্জ জেলে সবচেয়ে বড় ম্যাট হল দিরাইয়ের নানু মিয়া, সাধারণ কয়েদিদের বিভিন্নভাবে জিম্মী করে তাদের টাকা কড়ি লুট করে জেলখানায় সে রাজার হালে বসবাস করছে।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের ঝরঝরিয়া গ্রামের এক ব্যবসায়ী দৈনিক জনতার ডাককে বলেন- ‘নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করবেননা, সুনামগঞ্জ জেলা কারাগারে নানুর সিমাহীন আধিপত্য ও লাগামহীন দুর্নিতিতে মনে হয় কারাগার সে লিজ নিয়েছে, কারা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে প্রকাশ্যেই নানু তার অনৈতিক কার্যকলাপ প্রতিনিয়ত দেদারছে পরিচালনা করছে, অবস্থাদৃষ্টে প্রতিয়মান হয় এ যেনো দেখার কেউ নেই।
Leave a Reply