ডেস্ক রিপোর্ট::ফেনীতে দুবাই প্রবাসী সোহেল (৩৫) নামে এক যুবকের গলাকাটা লাশ উদ্ধারের ঘটনায় পুত্রবধূ শিউলী আক্তারকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছে শাশুড়ি নিরালা বেগম। গত শুক্রবার রাতে ফেনী মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন বলে জানান অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. নিজাম উদ্দিন। গত শুক্রবার দুপুরে ফেনী শহরের সুফি সদর উদ্দিন সড়কের (নাজির রোড) একটি ফ্ল্যাট থেকে মো. সোহেলের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত সোহেল কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গুণবতি ইউনিয়নের খাটরা গ্রামের আবুল কালামের ছেলে। ঘটনার পর থেকে সোহেলে স্ত্রী শিউলী, তার দুই সন্তান রিহান (৭) ও জান্নাত (৪) পলাতক রয়েছে।
ওসি মো. নিজাম উদ্দিন জানান, ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে নিহত সোহেলের মরদেহ দাফনের জন্য গতকাল দুপুরে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে মরদেহের ঘাড়ে, বাহুতে ও মাথায় অন্তত ৭টি গুরুতর আঘাত করার আলামত পাওয়া গেছে। ধামা দিয়ে কোপানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ওসি আরও জানান, ঘটনার পর পিবিআই ও সিআইডির একাধিক দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
ঘটনার পর থেকে মামলার আসামি সোহেলের স্ত্রী শিউলী পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশের একাধিক দল কাজ করছে।
নিহতের চাচাতো ভাই ফাহাদ উদ্দিন মাহমুদ জানান, সোহেল প্রায় ১২ বছর ধরে দুবাই আছেন। ৮ বছর আগে দেশে ফিরে তিনি চৌদ্দগ্রাম উপজেলার জগন্নাথ ইউনিয়নের খাজুরিয়া গ্রামের শিউলী আক্তারকে বিয়ে করেন। এরপর তিনি আবার দুবাই চলে যান। বছর দেড়েক আগে ফেনী শহরের সুফি সদর উদ্দিন সড়কে চৌধুরী সুলতানা ম্যানসন নামের একটি বাড়ির ষষ্ঠ তলার একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নেন সোহেল। ফ্ল্যাটে স্ত্রী শিউলী ও দুই সন্তান থাকতো। তিন মাসের ছুটিতে গত একমাস আগে দুবাই থেকে দেশে আসেন সোহেল।
ফাহাদ উদ্দিন মাহমুদ আরও জানান, দেশে আসার পর গত কোরবানির ঈদ থেকে সোহেলে সৎ মা আলেয়া বেগমের ভরণ-পোষণ নিয়ে সোহেল ও শিউলীর নিয়মিত ঝগড়া হতো। এর জেরে গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতের কোনো এক সময় সোহেলকে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায় তার স্ত্রী। এ সময় তার সঙ্গে ৭ বছরের ছেলে ও ৪ বছরের মেয়ে সন্তান ছিল। যাওয়ার সময় তার (স্ত্রী) বাবা মারা গেছেন বলে বাসার দারোয়ানকে জানায় শিউলী। সোহেলের সৎ মা আলেয়া বেগম জানান, তার ছেলে ও ছেলের বউয়ের মধ্যে প্রায়ই বাক-বিতণ্ডা হতো। ছেলে দুবাইতে বিয়ে করেছেন এমন অভিযোগ এনে ছেলের বউ প্রায় ঝগড়া করতো। ঘটনার দিনও তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়েছে।