মদ পান করে গাড়ি চালানো এবং দুর্ঘটনার অভিযোগে পদত্যাগ করেছেন নিউজিল্যান্ডের আইনমন্ত্রী কিরি অ্যালেন (৩৯)। ওই ঘটনার পর তার শ্বাসপ্রশ্বাসে এলকোহল বা মদের উপস্থিতি আছে কিনা তা পরীক্ষা করা হয়। এতে এলকোহলের উপস্থিতি পাওয়া যায়। ফলে সঙ্গে সঙ্গে তিনি পদত্যাগ করেন। জানিয়ে দেন, এই পদত্যাগ সঙ্গে সঙ্গে কার্যকর হবে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
অক্টোবরেই সেখানে জাতীয় নির্বাচন। আগে আগে গত মার্চ থেকে এ সময়ের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী ক্রিস হিপকিন্সের মন্ত্রিসভা থেকে তাকে নিয়ে মোট চারজন মন্ত্রী বিদায় নিলেন। রাজধানী ওয়েলিংটনে রোববার রাতে দুর্ঘটনা ঘটান মন্ত্রী কিরি অ্যালেন। এতে কোনো প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি।
কিন্তু নিয়ম যেখানে সবার জন্য সমান, সেখানে মন্ত্রী হলেই তিনি মাফ পেয়ে যাবেন এমন না। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার পরই গ্রেপ্তার করা হয়।
তাকে আটকে রাখা হয় প্রায় চার ঘন্টা। এই মামলার বিচারকাজ চলছে। পরবর্তী তারিখে তাকে আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছে। আইনের প্রতি কতটা শ্রদ্ধাশীল নিউজিল্যান্ড, তা এ ঘটনার মধ্য দিয়ে আবারও প্রমাণ হয়ে গেল।
প্রধানমন্ত্রী হিপকিন্স বলেছেন, মিসেস অ্যালেন চরম মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছেন। তিনি পদত্যাগ করলেও আপাতত সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, মিসেস অ্যালেন বুঝতে পেরেছেন- মন্ত্রিত্বে তার থাকা অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে একজন আইনমন্ত্রী হিসেবে ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত হওয়ার পর তার তো এ পদে থাকার কথাই নয়। আঞ্চলিক উন্নয়ন, সংরক্ষণ ও জরুরি ব্যবস্থাপনার দায়িত্বেও ছিলেন মিসেস অ্যালান। সম্প্রতি তিনি ব্যক্তিগত কারণে ছুটি নিয়েছিলেন। গত সপ্তাহে সোমবারই কাজে যোগ দিয়েছেন তিনি।
গত মাসে পার্টনারের সঙ্গে তার বিচ্ছেদ ঘটে। এরপর তার বিরুদ্ধে সহকর্মীদের সঙ্গে খারাপ আচরণের অভিযোগও ওঠে। এমন অবস্থায় সোমবার বিবৃতি দিয়েছেন মিসেস অ্যালেন। তিনি বলেন, তার বিশ্বাস ছিল ব্যক্তিগত সমস্যাগুলোর সঙ্গে পার্লামেন্টের দায়িত্বও পালন করতে পারবেন। চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারবেন। তার ভাষায়- রোববার আমি যা করেছি, তাতে এটাই প্রমাণ হয় আমি সুস্থ ছিলাম না। রাজনীতিতে তার ভবিষ্যত কি হবে তা তিনি পরে সিদ্ধান্ত নেবেন। এক সময় লেবার পার্টির ‘ডার্লিং’ হিসেবে দেখা হতো মিসেস অ্যালেনকে।
সম্প্রতি ক্ষমতা থেকে সরে গেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী জাসিন্দা আরডেন। তারপর ওই পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য তাকে পরামর্শ দেয়া হয়েছিল। তিনি স্বীকার করেছেন, দলের ভিতর বাজে অবস্থা চলছে। এমন এক সময়ে তাকে পদত্যাগ করতে হলো।
পরিবহন ও অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রী মাইকেল উড এ বছর জুন মাসে পদত্যাগ করেন। শেয়ারবাজারে তার নিজের সুবিধা নেয়ার খবর প্রকাশ করতে ব্যর্থতার জন্য এই পদত্যাগ। এর একমাস আগে কাস্টমস বিষয়ক মন্ত্রী মেকা হোয়াইটিরি পদত্যাগ করে অন্য দলে যোগ দেন। চার মাস আগে মার্চ মাসে বরখাস্ত করা হয় পুলিশ বিষয়ক মন্ত্রী স্টুয়ার্ট নাশ’কে। বলা হয়, দাতাদের কাছে তিনি গোপনীয় তথ্য তুলে দিয়েছেন। এ জন্য তাকে বরখাস্ত করা হয়।