নতুন আলো ডেস্ক::
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে রানীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্কুলের শিক্ষার্থী বেতন ভাতাদি সহ বিভিন্ন খাত হতে প্রাপ্ত অর্থ সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসাবে জমা না করে নিজ হাতে রেখে ইচ্ছা মাফিক ব্যয় করার অভিযোগ জেলা প্রশাসকের বরাবরে দেওয়া পর থেকে অত্র এলাকায় আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে। ম্যানেজিং কমিটির ১১ জন সদস্যদের মধ্যে ৭ জন পদত্যাগ করেন।
সরজমিনে গিয়ে অভিভাবক সদস্যদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, দুই বারের সভাপতি ও ১৬-১৭ইং কমিটির হিসাব নিরীক্ষা কমিটির সদস্য মুক্তার মিয়া রেজুলেশন করে স্কুলের টাকা ব্যয় করতে এবং ১৬-১৭ ইংরেজীতে শুধুমাত্র ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে ভর্তি,মাসিক বেতন,পরীক্ষা ফিস বাবত আনুমানিক ২৭ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা কালেকশন হওয়ার পরেও কেন ৯ লক্ষ টাকা ঋন হবে এমন প্রশ্ন করেন মুক্তার মিয়া। মিটিংয়ে থাকা সভাপতি বলেন, প্রধান শিক্ষক আপনি বিগত কমিটির হিসাব দেন এবং রেজুলেশন করে টাকা চান আমরা টাকা দিব।
এতে রাজি হননি রানীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সামাদ, তিনি বলেন রেজুলেশন লাগে না আপনি চেকে দস্তগত করেন। মূলত এ বিষয় নিয়েই সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এ টাকা দিতে অনীহা প্রকাশ করলে ও টাকা নিয়ে লেখা না থাকার জন্য দুই জনের মধ্যে কথাকাটি সহ সমস্যা সৃষ্টি হয়। এ সময় সভাপতি বলেন, আপনি কি জন্যে স্কুলের টাকা নিবেন তাহা লিখে না রাখলে এই টাকার দায় কে নেবে? আমি রেজুলেশন ছাড়া কোন চেকে দস্তগত করব না। প্রায় তিন মাস অপেক্ষার পরও প্রধান শিক্ষক কোন রেজুলেশন না করায় বিগত ২৬-২-১৮ ইং তারিখে বর্তমান সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট অনিয়মের অভিযোগ দাখিল করেন। যার ডকেট নং৪০৪।
অভিভাবক সদস্য আব্দুল আলী জানান, স্থানীয় প্রধান শিক্ষক হওয়ার সুবাধে বর্তমান কমিটির মধ্যে থাকা ৩ জন সদস্য শিক্ষককে বিভিন্ন ভাবে ভয় ভীতি দেখিয়ে উনার আয়ত্বে নেন, সাবেক প্রতিষ্টাতা সদস্য ১ জন যিনি ১৬-১৭ ইং সনের সাবেক সভাপতি, উনাকে বলা হয় উর্ধত্মন তদন্ত কারী দল আসলে হিসাবের জন্য আপনিও দায়ী হবেন। এমনকি আপনি যে সরকারি জায়গা রেজেস্ট্রারী করে দিয়ে ভূমি দাতা হয়েছেন সেটাও বেরিয়ে আসতে পারে। এই ভয়ে সাবেক সভাপতি বর্তমান সভাপতিকে সরাতে প্রধান শিক্ষককে সহযোগিতা করতে রাজি হন।
কমিটির সদস্যদের বুঝানো হয়, খন্ডকালীন শিক্ষক ১১ মাসের বেতন না পেয়ে চলে গেছেন এভাবে চলতে থাকলে সব শিক্ষক চলে যাবেন,তাই দ্রুত সবাই পদত্যাগ করে বর্তমান সভাপতিকে সরিয়ে দিয়ে এই ঝামেলা এখানেই মিটিয়ে দেই।
এদিকে পদত্যাগে রাজি না হওয়া অবিভাবক সদস্যরা বলেন, প্রধান শিক্ষক রেজুলেশন করে টাকা চাইলেই তো সভাপতি সাথে সাথে শিক্ষকদের বেতন দিয়ে দিতেন। তাছাড়া সাবেক সভাপতির আমলের ৭ মাস ও বর্তমান সভাপতির আমলের ৪ মাসের শিক্ষকদের বকেয়া বেতনের দায় আমরা একা বর্তমান সভাপতির উপরে চাপিয়ে দিতে পারবনা।
এ ব্যাপারে বর্তমান সভাপতির সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন রানীগঞ্জ স্কুল,কলেজ,মাদ্রাসা প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানে আমি ও আমার ভাই দাতা সদস্য,আমি চেয়েছিলাম স্কুলের আয় দিয়ে স্কুলে ভাল সাইয়েন্সের শিক্ষক নিয়োগ দেব কারন বেতনের কারনে ভাল শিক্ষক থাকেন না, এছাড়া সাইন্সের ছাত্রদের জন্য গবেষণার যন্ত্রপাতি নেই যার জন্যে ছাত্রদের মেধার বিকাশ হচ্ছে না। আমি আশাবাদী আমি যদি নাও থাকি সুষ্ট তদন্তের মাধ্যমে দূর হবে এসব অনিয়ম,রানীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় হবে উপজেলার মধ্যে শ্রেষ্ঠ সাইয়েন্সের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
এ ব্যাপারে রানীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সামাদ বলেন,আমার স্কুলের কখনও ২৭ থেকে ২৮ লক্ষ টাকা আয় হয়নি। প্রতি বছর ৯ থেকে ১০ লক্ষ টাকা ছাত্র/ছাত্রীদের বেতন ও ইত্যাদি বাবত আসে।বর্তমান সভপতি আসার পর আমাদেরকে কোন টাকা দেন নাই। শুধু মাত্র এসএসসি পরীক্ষায় শিক্ষকদের সম্মানী ভাতা বাবত ৩৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে।আর রেজুলেশন ছাড়া কোন টাকা উত্তোলন করা হয় নাই। বর্তমান সভাপতির প্রতি অনাস্থা এনে ৭জন অভিভাবক সদস্য পদত্যাগ করেন।
সূত্র: দৈনিক জালালাবাদ।
Leave a Reply